ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া বক্সিং-ডে টেস্টে জুড়ল এই নতুন মাইলফলক

ক্রিকেটের (Cricket) সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংস্করণ টেস্ট ক্রিকেট (Test Cricket) । এটি যতটা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, বিশেষ করে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার (India vs Australia)…

india vs australia face of in border-gavaskar trophy

short-samachar

ক্রিকেটের (Cricket) সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংস্করণ টেস্ট ক্রিকেট (Test Cricket) । এটি যতটা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, বিশেষ করে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার (India vs Australia) মতো ক্রিকেট শক্তিশালী দেশগুলিতে, তা এক কথায় বিস্ময়কর। টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে, ২০২৪ সালের বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির (Border Gavaskar Trophy) মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত বক্সিং-ডে টেস্টের (Boxing Day Test) কথা আলাদা করে উল্লেখ করতে হবে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (MCG) আবারও একটি বড় মাইলফলক ছুঁয়েছে, যেখানে পাঁচদিনে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭০০ এর বেশি দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়ে একটি নতুন রেকর্ড (Record Attendence) তৈরি করেছে।

   

বছর শেষের আগেই আনন্দে আত্মহারা মহামেডান সমর্থকরা! আসছেন এই ফুটবলার

এই ম্যাচটি ইতিহাসের পৃষ্ঠা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। মেলবোর্নে টেস্ট ক্রিকেটে এত বেশি দর্শক এর আগে কখন আসেননি। সর্বশেষ ১৯৩৭ সালে এই স্টেডিয়ামেই ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে একটি ম্যাচে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার ৫৩৪ জন দর্শক মাঠে এসেছিলেন। তখন, ক্রিকেটের কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যান ছিলেন মাঠে। কিন্তু এখন, ৮৭ বছর পর, এই রেকর্ডটি টপকে গিয়েছে বর্তমান সময়ের খেলোয়াড়দের মধ্যে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে হওয়া বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির চতুর্থ টেস্ট ম্যাচে।

বছর শেষে মুখোমুখি মুম্বাই এবং নর্থ ইস্ট, ‘বিস্ফোরক’ বেনালি

বিশ্ব ক্রিকেটের এই ঘটনাটি সত্যিই নজর কাড়ার মতো। ১৯৩৭ সালে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে ৩৬৫ রানে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। তবে গত ম্যাচে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আরও বড় সংখ্যক দর্শক সমাগম দেখানো হয়েছে। এই ম্যাচে প্রতিদিনের দর্শকদের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে প্রথম দিনে ৮৭,২৪২ জন, দ্বিতীয় দিনে ৮৫,১৪৭ জন, তৃতীয় দিনে ৮৩,০৭৩ জন এবং চতুর্থ দিনে ৪৩,৮৬৭ জন।

মেলবোর্ন টেস্টে এত বেশি দর্শকের উপস্থিতি নতুন প্রমাণ দেয় যে, টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি মানুষের আগ্রহ এখনও সুরক্ষিত। ২০২২ সালে ভারত-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৯০,২৯৩ জন দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়েছিল। তাও ছিল একটা বিরাট সংখ্যা, তবে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি এই উচ্চতা প্রমাণ করে যে ক্রিকেটের ঐতিহ্য এবং দীর্ঘস্থায়ী ফরম্যাটের প্রতি মানুষের ভালোবাসা কখনও কমবে না।

কেরালা ব্লাস্টার্সকে পরাজিত করে কী বললেন খালিদ জামিল?

বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড রয়েছে ১৯৯৯ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ভারত-পাকিস্তান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। সেখানে প্রায় ৪ লাখ ৬৫ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিলেন। এই ম্যাচের আকর্ষণ ছিল অসাধারণ, এবং মাঠে দর্শকদের উপস্থিতি সেটির বড় প্রমাণ ছিল।

মেলবোর্নের এই ম্যাচটি শুধু ভারতীয় দর্শকদের জন্য নয়, অস্ট্রেলিয়ানদের জন্যও এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ট্রফির মতো ঐতিহাসিক সিরিজের জন্য অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এত দর্শক উপস্থিতি একটি স্বীকৃতি যে, ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় কতটা আগ্রহ রয়েছে। এদিকে, ম্যাচের প্রথম দিনের ভিড়ই বলে দেয় যে, এটি ছিল খুবই আকর্ষণীয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ এক ক্রিকেট ইভেন্ট।

এমসিজিতে চলতে থাকা ম্যাচের প্রতি দর্শকদের আগ্রহের মূল কারণ ছিল ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের উপস্থিতি, বিশেষ করে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং অন্যান্য তারকাদের খেলা। ভারতীয় ক্রিকেট দলের শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের লড়াই আরও একবার বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করেছে।

ছন্দে ফিরছেন স্টুয়ার্ট, খেলবেন হায়দরাবাদ ম্যাচ?

এছাড়া, টেস্ট ক্রিকেটের এই বিশাল দর্শক সমাগমের ফলে, ক্রিকেট বোর্ডগুলোও ভবিষ্যতে আরও বড় এবং আরও আকর্ষণীয় টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ধরনের ইভেন্টগুলি কেবল ক্রিকেটের প্রচারের জন্য নয়, ক্রিকেট সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে এমসিজিতে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ এতটা তুঙ্গে, তা ভবিষ্যতের ক্রিকেট ইভেন্টগুলোর জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে। ক্রিকেটের ঐতিহ্য এবং প্রাচীনতা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে যে আবেগ এবং সম্মান রয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।