ভারতীয় ফুটবলে (Indian Football) ২০২৪ সালের ট্রান্সফার উইন্ডো ছিল বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। অনেক বড় খেলোয়াড়রা নিজেদের নতুন ক্লাবে যোগ দিয়েছেন এবং কিছু খেলোয়াড় দ্রুতই নিজেদের স্থান তৈরি করে ফেলেছেন। কিছু ক্ষেত্রে, ট্রান্সফারগুলি শুধুমাত্র ক্লাবের জন্য নয়, বরং পুরো আইএসএলের (ISL) উল্লেখযোগ্য ছিল। ২০২৪ সালে ভারতীয় ফুটবলে হওয়া সেরা ১০ ফুটবলারের দল পরিবর্তন কিংবা ট্রান্সফারের তালিকায় রয়েছেন মোহনবাগানের (Mohun Bagan SG) প্রাক্তন চার ফুটবলার (Former Four Footballer)। যা বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ন হয়ে উঠেছে বছর শেষের আগে।
১০. লালরিনলিয়ানা হানামতে (Lalrinliana Hnamte)
লাল-হলুদ শিবিরের এই দুই ফুটবলারের প্রশংসা অস্কারের মুখে
মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট থেকে চেন্নাইয়িন এফসি তে যাওয়া ২১ বছর বয়সি এই মিডফিল্ডার প্রথম ম্যাচ থেকেই নিজের জাত চিনিয়েছেন। তাঁর উন্নতির জন্য, হানামতে অক্টোবর মাসে ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে হয়ে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে নিজের আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রেখেছিলেন। তাঁর খেলায় ধারাবাহিকতা তাঁকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
৯. আনোয়ার আলি (Anwar Ali)
কলকাতা ময়দানের এক শিবির ছেড়ে অন্য শিবিরে যাওয়া কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল আনোয়ার আলিকে। তবে বাগান থেকে ইস্টবেঙ্গলে যাওয়া পর লাল-হলুদ জার্সিতে আনোয়ার আলি প্রাথমিকভাবে প্রত্যাশা মতো খেলতে পারেননি, কিন্তু এখন তিনি রেড অ্যান্ড গোল্ড ব্রিগেডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন। ২৪ বছর বয়সি এই ডিফেন্ডার দলের প্রতি অত্যন্ত আস্থা তৈরি করেছেন এবং ক্লাবের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।
৮. জাভি হের্নানডেজ (Javi Hernandez)
বেঙ্গালুরু এফসি থেকে জামশেদপুর এফসিতে যোগ দেওয়া স্প্যানিশ মিডফিল্ডার জাভি হের্নানডেজ ১০টি আইএসএল ম্যাচে ৩ গোল করে ক্লাবের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাঁর নেতৃত্ব এবং খেলার দক্ষতা জামশেদপুরকে সেরা দলে পরিণত করতে সাহায্য করছে।
৭. উইলমার জর্ডান গিল (Wilmar Jordan Gil)
কেরালার বিরুদ্ধে লক্ষ্য তিন পয়েন্ট, চেরনিশভের সম্ভাব্য একাদশে কারা?
পাঞ্জাব এফসি থেকে চেন্নাইয়িন এফসিতে যোগ দেওয়া কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার উইলমার জর্ডান গিল চেন্নাইয়িনের শীর্ষ গোলদাতা। ৬ গোল করার পর, যদিও তাঁর কিছুটা ফর্ম কমেছে, তবুও তিনি গোল্ডেন বুটের দৌড়ে আছেন।
৬. নিখিল পুজারি (Nikhil Poojary)
হায়দরাবাদ এফসি থেকে বেঙ্গালুরু এফসিতে যোগ দেওয়া ২৯ বছর বয়সি এই ভারতীয় ফুটবলার ২০টি আইএসএল ম্যাচে অংশ নিয়ে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাঁর পেশাদারী দৃষ্টিভঙ্গি এবং পারফরম্যান্স বেঙ্গালুরুকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
৫. হুগো বুমোস (Hugo Boumous)
মোহনবাগান থেকে ওডিশা এফসিতে যোগ দেওয়া এই ফরাসি মিডফিল্ডার আইএসএলে ১১ ম্যাচে ৩ গোল এবং ৪টি অ্যাসিস্ট করেছে। তাঁর ক্রিয়েটিভ পাসিং এবং আক্রমণাত্মক খেলা ওডিশা এফসির পারফরম্যান্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
৪. আকাশ সাঙ্গওয়ান (Aakash Sangwan)
জামশেদপুর ম্যাচ জিতেও কেন সমর্থকদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন অস্কার?
চেন্নাইয়িন এফসি থেকে এফসি গোয়াতে যোগ দেওয়া এই লেফ্ট-ব্যাক খেলোয়াড় ২টি অ্যাসিস্ট দিয়ে নিজের মেধা প্রমাণ করেছেন। এছাড়া, আকাশ তাঁর আন্তর্জাতিক অভিষেকও করেছেন অক্টোবর মাসে, যখন তিনি ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে খেলেন।
৩. নোয়া সাদাউই (Noah Sadaoui)
এফসি গোয়া থেকে কেরালা ব্লাস্টার্সে যোগ দেওয়া মরোক্কান ফরোয়ার্ড নোয়া সাদাউই আইএসএলে ৪ গোল এবং ৪ অ্যাসিস্ট করে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন। যদিও তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, তবুও তিনি ব্লাস্টার্সের আক্রমণাত্মক পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
২. অপুইয়া (Lalengmawia Ralte)
মুম্বাই সিটি থেকে বাগানে যোগ দেওয়া অপুইয়া মিডফিল্ডে অসাধারণ ভূমিকা পালন করছেন। ২৩ বছর বয়সি এই খেলোয়াড় দলটির সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে এক গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি মোহনবাগানের আইএসএল শিল্ডে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদী মেরিনার্সরা।
১. আর্মান্ডো সাদিকু (Armando Sadiku)
জামশেদপুর বধ করেই ‘বিস্ফোরক’ অস্কার, করলেন ভবিষ্যৎবাণী!
বাগান ছেড়ে এফসি গোয়াতে যোগ দেওয়া এই ৩৩ বছর বয়সি স্ট্রাইকার ১১টি আইএসএল ম্যাচে ৮ গোল এবং ২টি অ্যাসিস্ট করেছেন। সাদিকু বর্তমানে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ২০২৪ সালে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা সাইনিং হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।
এছাড়াও, মাদিহ তালাল, জিকসন সিং, রাহুল ভেকের মতো খেলোয়াড়েরা এই তালিকায় স্থান না পেলেও তাঁদের ট্রান্সফারগুলি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০২৪ সালে ভারতীয় ফুটবলের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে, যেখানে নতুন মুখ এবং পুরানো তারকারা সমানভাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছেন।