শোয়েবের বিলিওনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন! পিসিবিকে আর্থিক মডেল প্রস্তাব

পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা পেসার শোয়েব আখতার (Shoaib Akhtar) এবার নিজেকে বিলিওনিয়ার হিসেবে দেখতে চান। শুধুমাত্র বিলিওনিয়ারই নয়, নিজের দেশের মোট অর্থনৈতিক সম্পদের থেকেও বেশি উপার্জন…

short-samachar

পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা পেসার শোয়েব আখতার (Shoaib Akhtar) এবার নিজেকে বিলিওনিয়ার হিসেবে দেখতে চান। শুধুমাত্র বিলিওনিয়ারই নয়, নিজের দেশের মোট অর্থনৈতিক সম্পদের থেকেও বেশি উপার্জন করতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার। কখনও টিভি বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কখনও ইউটিউব কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে আবার কখনও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন তিনি।

   

একটি পডকাস্টে কথা বলতে গিয়ে শোয়েব জানিয়েছেন, প্রচুর অর্থ উপার্জনের জন্য তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বর্তমানে তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এতেও তিনি সন্তুষ্ট নন।

বিলিওনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন
TNKS পডকাস্টে শোয়েব আখতার বলেন, “আমি পাকিস্তানের প্রথম মার্কিন ডলার বিলিওনিয়ার হতে চাই। এমনকি পাকিস্তানের পুরো অর্থনৈতিক সম্পদের চেয়েও বেশি উপার্জন করতে চাই। আমি মজা করছি না, আমি একদম সিরিয়াস।”

২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন শোয়েব। ভারত-পাকিস্তানের ঐতিহাসিক সেমিফাইনাল ম্যাচের পরই তিনি খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় জানান। সেই ম্যাচে পাকিস্তান হেরে গেলেও শোয়েব বিশ্বাস করেন, যদি তাঁকে সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে খেলানো হতো, তবে পাকিস্তান শিরোপা জিততে পারত। “আমার হাতে মাত্র দু’টি ম্যাচ ছিল। আমি টিম ম্যানেজমেন্টকে বলেছিলাম, আমাকে খেলান। আমি ভারতকে সেমিফাইনালে হারাতে দিতাম না। এমনকি ফাইনালেও পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করতাম,” বলেন শোয়েব।

Shoaib Akhtar Blasts Pakistan Cricket Team

পিসিবিকে আর্থিক মডেলের প্রস্তাব
শোয়েব আখতার আরও জানান যে, তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মোহসিন নকভির কাছে একটি আর্থিক মডেলের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাব অনুযায়ী, পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) কে আরও বৃহৎ পরিসরে আনার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

শোয়েব বলেন, “আমি নকভি স্যারকে একটি আর্থিক মডেল দিয়েছি। পিএসএল-এ পাঁচটি দলের পরিবর্তে ৫০টি দল অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছি। আমি বলেছি, পিএসএলের কোয়ালিফাইং টুর্নামেন্ট শুরু করা হোক – একে বলা যেতে পারে পিএসএল ২.০। প্রতিটি অঞ্চল থেকে আটটি দল থাকবে এবং মোট আটটি অঞ্চল তৈরি করা হোক। এক এক করে শুরু করা যেতে পারে, তিন বছরের মধ্যে আটটি অঞ্চল চালু করা সম্ভব।”

এই মডেলটি প্রয়োগের জন্য তিনি পিসিবিকে অনুরোধ করেছেন, তবে নিজে পিসিবির সঙ্গে কাজ করতে আর আগ্রহী নন বলেই জানিয়েছেন। শোয়েব বলেন, “আমি কখনও পিসিবির চাকরি চাইনি, আমি পিসিবিতে কখনও কাজ করিনি। মানুষ আমাকে ভয় পায়, তাই হয়তো আমাকে দূরে রাখে।”

নিজেকে প্রমাণ করার দৃঢ় সংকল্প
ক্রিকেটার হিসেবে যেমন নিজের ফাস্ট বোলিং দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়েছিলেন শোয়েব আখতার, তেমনই ক্রিকেট ছাড়ার পর নতুন সব উদ্যোগের মাধ্যমে নিজের কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমি জীবনে সবসময় বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখি। শুধুমাত্র বড় ক্রিকেটার নয়, জীবনে বড় মানুষ হয়ে উঠতে চাই।”

উল্লেখ্য, শোয়েব আখতারের প্রস্তাবিত মডেল যদি পিসিবি বাস্তবায়ন করতে পারে, তবে তা শুধু পাকিস্তানের ক্রিকেট নয়, পুরো ক্রিকেট বিশ্বের জন্যই নতুন দিশা হতে পারে। তাঁর প্রস্তাবিত মডেল পিএসএল-এর অর্থনৈতিক ভীতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নতুন প্রতিভাদের উঠে আসার সুযোগ করে দেবে।

তবে শোয়েব আখতারের এই মন্তব্য এবং পরিকল্পনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ তাঁর সাহস এবং চিন্তাশক্তির প্রশংসা করেছেন, আবার অনেকেই তাঁর বিলিওনিয়ার হওয়ার মন্তব্যকে অতিরঞ্জিত বলে মনে করছেন।

শোয়েব আখতার বরাবরই ব্যতিক্রমী এবং আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য পরিচিত। ক্রিকেট জীবনে যেমন তাঁর বোলিংয়ে স্পিড এবং আগ্রাসনের ছাপ ছিল, তেমনই অবসর নেওয়ার পর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই একই আক্রমণাত্মক ধারা বজায় রেখেছেন। পিসিবিকে তাঁর দেওয়া আর্থিক মডেল যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা পাকিস্তানের ক্রিকেটের ইতিহাসে বড়সড় পরিবর্তন আনবে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।

তবে শোয়েব আখতারের বিলিওনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন এবং পিসিবিকে দেওয়া মডেল ভবিষ্যতে কতটা কার্যকরী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।