বছর শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট। ইডির মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থকে…

partha chatterjee bail plea granted by Supreme Court

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট। ইডির মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থকে (Partha Chatterjee) জামিন দিতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে যে, ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) এর মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের নির্দেশ ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কার্যকর হবে। তবে এই জামিনের ফলে তাঁর জেলমুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই, কারণ জামিন পাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চার্জ গঠন করতে হবে এবং এমন সাক্ষী যারা প্রভাবিত হতে পারেন, তাদের বয়ান রেকর্ড করতে হবে। এই সমস্ত শর্ত পূরণের পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন কার্যকর হবে।

   

এই মামলার সমস্ত কার্যক্রম ইডির তদন্তের অন্তর্ভুক্ত, তবে সিবিআইয়ের (কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো) মামলার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ, সিবিআইয়ের মামলা নিয়ে জামিনের বিষয়ে কোনও নির্ধারণ করা হবে না, শুধু ইডির মামলায় জামিনের শর্তগুলি পূরণ হলেই তিনি জামিন পাবেন।

২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে ২০২১ সালের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় তদন্ত চলছিল। ইডি এবং সিবিআই দুটোই এই মামলায় তদন্ত করছে, এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর একাধিকবার জামিনের আবেদন করা হলেও, আদালত সেই আবেদনগুলি খারিজ করে দিয়েছে।

জামিনের শর্তাবলী এবং জামিনের প্রক্রিয়া

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের শর্ত পূরণ করতে হবে ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। শর্তগুলির মধ্যে অন্যতম হলো, চার্জ গঠন করতে হবে এবং সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করতে হবে। যেসব সাক্ষী প্রভাবিত হতে পারেন, তাঁদের বয়ান আগে নেওয়ার জন্য তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আদালত নিশ্চিত করতে চায় যে, সাক্ষীদের উপর কোনও চাপ সৃষ্টি হচ্ছে না এবং তদন্তের গতিপথ বিঘ্নিত হচ্ছে না।

এই নির্দেশে আরও স্পষ্ট করা হয়েছে যে, সিবিআইয়ের মামলার সঙ্গে ইডির মামলার কোনও সম্পর্ক নেই, তাই সিবিআইয়ের মামলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র ইডির মামলায় শর্ত পূরণ হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পেতে পারেন।

এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের মাত্রা এবং তদন্তের গুরুত্ব তাকে জামিন পেতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

প্রথম দিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর তিনি অনেক আশা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে তার কিছুটা আস্থা ফিরে এসেছে। আদালতের শর্ত পূরণের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন কার্যকর হতে পারে, তবে সেই সময়ে তাঁর জেলমুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই। এ প্রশ্নটি অনেকেই তুলেছেন, যে এতদিন পরেও কেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মেলেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, এবং মামলা খুবই জটিল। এই ধরনের মামলা সাধারণত দ্রুত নিষ্পত্তি হয় না, কারণ এতে সময় লাগতে পারে সাক্ষীদের বয়ান নেওয়া, চার্জ গঠন এবং অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। পাশাপাশি, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং মামলার গুরুত্বও বিচারাধীন বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে।