অবশেষে মিটছে দূরত্ব? সোমবার বিকেলেই বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের

রাজভবন এবং নবান্নের সম্পর্ক, যা এক সময় ছিল সুসম্পর্কপূর্ণ, (Mamata Banerjee will meet CV Ananda Bose) বর্তমানে কিছুটা জটিল হয়ে উঠেছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের…

West Bengal CM Mamata Banerjee to Meet Governor CV Ananda Bose on Monday

রাজভবন এবং নবান্নের সম্পর্ক, যা এক সময় ছিল সুসম্পর্কপূর্ণ, (Mamata Banerjee will meet CV Ananda Bose) বর্তমানে কিছুটা জটিল হয়ে উঠেছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বাংলার রাজ্যপাল(Mamata Banerjee will meet CV Ananda Bose) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর, প্রথমে তাদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

বিশেষ করে, রাজ্যপাল (Mamata Banerjee will meet CV Ananda Bose)বাংলায় শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করার পর ২০২৩ সালে সরস্বতী পুজোর দিনে রাজভবনে এক ঐতিহ্যবাহী হাতেখড়ি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন এবং রাজ্যপালের হাতে বর্ণ পরিচয় তুলে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে মনে হচ্ছিল, রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে (Mamata Banerjee will meet CV Ananda Bose)সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক।

   

তবে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হতে শুরু করেছিল। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, যিনি তখন পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে তীব্র বিবাদ শুরু হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল এবং তার পরবর্তী ঘটনাবলি নিয়ে রাজ্যপালের ক্ষোভ প্রকাশ পায়, যা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভালোভাবে গৃহীত হয়নি। বিশেষ করে, রাজ্যপালের মন্তব্য এবং হস্তক্ষেপ রাজ্য সরকারের কাছে একপ্রকার অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছিল।

এছাড়া, রাজ্যপাল এবং রাজ্যের মধ্যে সংঘাত তখন আরও তীব্র হয়ে ওঠে যখন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, বিশেষ করে তিনি রাজ্যের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ না করে, তার নিজের সিদ্ধান্তে উপাচার্য নিয়োগের পথে এগিয়ে গেছেন। এই সমস্যা এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছায়। রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সেই সময় উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বলেছিলেন, রাজ্যপাল তাকে ডাকলেও তিনি রাজভবনে যাবেন না।

তবে সম্প্রতি কিছু পরিবর্তন দেখা গেছে। দুই দিন আগে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের সুপারিশ অনুমোদন করেছেন, যা রাজভবন এবং নবান্নের সম্পর্কের নতুন দিক নির্দেশ করছে। এর ফলে কিছুটা হলেও আগের শীতলতা দূর হয়েছে এবং সম্পর্কের মধ্যে একটি নতুন সহমত সৃষ্টি হয়েছে।

এখন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজভবনে আসবেন বলে খবর রয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টেয় রাজভবনে এ সাক্ষাৎ হবে এবং সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠক, যা রাজ্য সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে হতে পারে, তা রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে নতুন সমঝোতা সৃষ্টি করতে পারে।

মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের এই বৈঠক রাজ্যের প্রশাসনিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারে। যদি এই বৈঠক সফল হয় এবং দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা তৈরি হয়, তবে এটি রাজভবন এবং নবান্নের সম্পর্কের মধ্যে একটি নতুন সূচনা হতে পারে। তবে, রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের সম্পর্কের ভবিষ্যত কী হবে, তা সময়ের উপর নির্ভর করছে। শীতল সম্পর্কের পর, এখনো একটি সম্ভাবনা রয়েছে যে দুই পক্ষই তাদের বিরোধী মনোভাব দূর করে, একে অপরের সাথে সমঝোতা করবে এবং রাজ্যের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এক নতুন যুগের সূচনা হতে পারে, যেখানে রাজ্যপাল-নবান্নের সম্পর্কের মধ্যে এক ধরনের ভারসাম্য এবং সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হবে। রাজ্যপালের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক যদি ইতিবাচক হয়ে ওঠে, তবে তা রাজ্যের প্রশাসনিক কাজকর্মের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা রাজ্যের জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে।

সংক্ষেপে, রাজভবন এবং নবান্নের সম্পর্কের এই গতিপথ দেখাচ্ছে যে, দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সত্ত্বেও সম্পর্কের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে, তবে এর জন্য সময় এবং সদিচ্ছার প্রয়োজন।