কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে (Scottish church collage) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ‘অশ্লীল মেসেজ’ পাঠানোর অভিযোগ ঘিরে তুমুল বিতর্ক ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। কলেজের পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন, ওই শিক্ষক তাঁর ছাত্রীকে আপত্তিকর বার্তা পাঠিয়েছেন। ঘটনাটি জানিয়ে প্রথমে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হলেও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন পড়ুয়ারা।
ত্রিপুরা-মালদহের পর এবার জলপাইগুড়ি! বয়কট বাংলাদেশ পোস্টার, বন্ধ হোটেল
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, প্রথম দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে উদাসীনতা দেখিয়েছিল। এর প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভে নামেন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ এবং সহকারী অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। অভিযোগ উঠেছে, দুই অধ্যক্ষই অভিযোগকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা জানান, “আমরা কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটির কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা আর চুপ করে বসে থাকতে পারি না। আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
কলকাতা-লন্ডন সরাসরি বিমান চালানোর প্রস্তাব চন্দ্রিমার
পড়ুয়াদের ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশেষে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে অভিযুক্ত শিক্ষককে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর রয়েছে অধ্যক্ষের। সেখানে বলা হয়েছে, অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষক সাসপেন্ড থাকবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এই সিদ্ধান্তেও পড়ুয়াদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। তাঁরা অধ্যক্ষ এবং সহকারী অধ্যক্ষের ইস্তফার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, অভিযোগ পাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি এবং ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
এক পড়ুয়া বলেন, “আমাদের কলেজের সুনাম নষ্ট হয়েছে। আমরা চাই অধ্যক্ষ এবং সহকারী অধ্যক্ষ পদত্যাগ করুন। যাঁরা আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তাঁদের এই পদে থাকার অধিকার নেই।”
কলেজের তরফ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তাঁরা পড়ুয়াদের উদ্বেগকে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছেন। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, “আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছি। সঠিক প্রক্রিয়া মেনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।”
পেটের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি অর্পিতা
এই ঘটনার পর কলেজের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এক অভিভাবক বলেন, “আমাদের সন্তানরা যদি কলেজে নিরাপদ না থাকে, তবে আমরা কোথায় যাব? কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব আরও সজাগ হওয়া প্রয়োজন।”
স্কটিশ চার্চ কলেজে এই ঘটনার পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা শুধু কলেজের ভেতরে নয়, বৃহত্তর শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে শিক্ষার্থী নিরাপত্তা এবং অভিযোগের সঠিক নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।