ভারতের প্রাচীন বাণিজ্যপথগুলি নিয়ে নতুনভাবে ভাবনার শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) তাঁর বৈদেশিক বাণিজ্যের সম্ভাবনা বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই উদ্যোগে তিনি নির্দেশ দেন, প্রাচীন ভারতীয় বাণিজ্যপথগুলি পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে। এর পর থেকেই দিল্লি ‘কটন রুট’ (Cotton Route) পুনরুজ্জীবনের প্রকল্প নিয়ে কার্যত জোরালো পরিকল্পনা শুরু করে।
চিন্ময়কৃষ্ণর ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ মামলায় আইনজীবী খুনে ধৃত চন্দন, চট্টগ্রাম সরগরম
কটন রুট, যা এক সময় ভারতের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের দেশগুলির বাণিজ্যিক যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল, সেই পথ নতুনভাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছে ভারত। এই রুট প্রাচীন ভারতের বস্ত্র ও তুলার বৈশ্বিক জনপ্রিয়তার সাক্ষী। সিল্ক রুটের মতোই কটন রুট ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ, যা ভারতকে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল। ভারতীয় তুলা, যা তখন বিশ্ববাজারে উচ্চমানের প্রতীক ছিল, ভূমধ্যসাগরের বাণিজ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন করত।
আধুনিক কালে, কটন রুট পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা শুধুমাত্র ঐতিহাসিক সম্পদকে তুলে ধরার জন্যই নয়, বরং এটি বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীনের সিল্ক রুটের মোকাবিলায় এই উদ্যোগ ভারতের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। এটি কেবল ভারতের বাণিজ্যিক শক্তি বৃদ্ধিতেই সাহায্য করবে না, বরং ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
বাড়তে চলেছে সম্পত্তি করের বোঝা, বিধানসভায় জোড়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য
চীন তাদের সিল্ক রুট পুনরুজ্জীবন করে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)-এর মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্পের কারণে ঋণের ফাঁদ এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। ভারত চীনের এই আধিপত্যের জবাবে কটন রুটকে পুনরুজ্জীবিত করে একটি বিকল্প বাণিজ্যপথ তৈরি করতে চাইছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলিকে আরও স্বাধীন এবং নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক সংযোগ দেবে।
ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে ইতালি, বিশেষ করে রোম, ভারতের কটন রুট প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারে। ইতালির সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং বর্তমান বাণিজ্যিক সহযোগিতা এই প্রকল্পকে একটি নতুন দিশা দিতে পারে। ইতিমধ্যেই ভারত এবং ইতালির মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় কটন রুটকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
ভাঙরে বিডিও অফিস-এ আরাবুলের গাড়িতে তল্লাশি, মিলল কোদালের বাঁট, প্লাস্টিকের পাইপ
কটন রুটের পুনরুজ্জীবন কেবল ভারতীয় পণ্য ও সংস্কৃতির বৈশ্বিক প্রচারেই সাহায্য করবে না, বরং এটি ভারতকে একটি নতুন কৌশলগত অবস্থানে নিয়ে আসবে। বিশেষত, দক্ষিণ এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য তৈরিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ভারতীয় বস্ত্রশিল্প, যা প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্ববাজারে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে, এই রুটের মাধ্যমে আবারও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শক্তিশালী উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে।