দেশে জনসংখ্যা বাড়ানোর নিদান আরএসএস প্রমূখ মোহন ভগবতের (Mohan Bhagwat)।আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ)-এর প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat) সম্প্রতি নাগপুরে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, পরিবারে অন্তত তিনটি সন্তান থাকা উচিত, যাতে সমাজে জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় থাকে। তার এই মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে, বিশেষ করে বিহারে।
বাংলাদেশ সীমান্তে বিপুল সেনা মোতায়েন ভারতের, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ‘ভয়’ ঢাকার
নাগপুরে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভাগবত বলেন, “জনসংখ্যা হ্রাস একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। আধুনিক জনসংখ্যাতাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কোনও সম্প্রদায়ের জন্মহার ২.১-এর নিচে নেমে যায়, সেই সমাজ বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যায়। এটি কোনও বাইরের আক্রমণ ছাড়াই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যেই বহু ভাষা এবং সম্প্রদায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে এই কারণে।”
তিনি আরও বলেন, জনসংখ্যা হ্রাস কেবলমাত্র সংখ্যার বিষয় নয়, এটি সমাজের সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক অস্তিত্বের জন্যও হুমকি। “আমাদের জনসংখ্যা ২.১-এর নিচে নামতে দেওয়া উচিত নয়। এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন।”
গরুর মাংস নিষিদ্ধ করতে পদক্ষেপ নেবে রাজ্য,স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বহু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, তার এই প্রস্তাব আধুনিক পরিবার পরিকল্পনার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে সচেতন থাকার বদলে তিনি জনসংখ্যা বাড়ানোর কথা বলে একটি ভিন্ন বার্তা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক মহলেও এই মন্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিহারে বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছে। তাদের দাবি, এ ধরনের মন্তব্য সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং আধুনিক পরিবার পরিকল্পনার উদ্যোগগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ভাগবত তার মন্তব্যে জনসংখ্যাতত্ত্বের কিছু গবেষণার উল্লেখ করেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, তার উত্থাপিত যুক্তিগুলি আংশিক সত্য হলেও বর্তমান সময়ে তা ভারতের মতো জনবহুল দেশের জন্য প্রাসঙ্গিক নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে ইতোমধ্যেই মোট প্রজনন হার (Total Fertility Rate) কমে এসেছে এবং এটি বর্তমানে ২.০-এর কাছাকাছি, যা জনসংখ্যার স্থায়িত্বের জন্য যথেষ্ট। তবে এটি কোনও সমাজের অস্তিত্বের জন্য হুমকি নয়।
ভাগবতের এই বক্তব্য নিয়ে বিজেপি বিরোধী দলগুলি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা মনে করছেন, এই মন্তব্যের মাধ্যমে আরএসএস জনসংখ্যা নিয়ে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে।
দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মীয়মাণ টানেল ভেঙে মৃত্যু শ্রমিকের, জখম ৩
বিহারের এক বিরোধী নেতা বলেন, “ভারত এমনিতেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। জনসংখ্যা বাড়ানোর পরিবর্তে আমাদের উচিত শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করা।”
ভাগবতের মন্তব্য সাধারণ মানুষের মধ্যেও নানা ধরনের প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। কিছু মানুষ তার বক্তব্যকে সমর্থন করলেও অনেকেই মনে করছেন, এটি আধুনিক সময়ে অবাস্তব।