কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ (Sushanta Ghosh) সম্প্রতি একটি ভয়ানক আক্রমণের শিকার হন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কসবা এলাকায় কিছু আততায়ীর হাতে গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয় তাঁকে। তবে সৌভাগ্যবশত পিস্তলটি কাজ না করায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ব্যক্তিগতভাবে সুশান্তকে ফোন করে খোঁজ নেন। পরের দিন শনিবার ফোনে সুশান্তকে সমর্থন জানান এবং দলের প্রতি আস্থা রাখতে বলেন।
বুধবার সন্ধ্যায় সুশান্ত ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক (meeting) করেন। বৈঠকটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ সেখানে কসবা এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যদিও সুশান্ত বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করতে চাননি, তবে তৃণমূলের কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সুশান্তের মতামত নিয়েছেন এবং তাকে আগের মতোই কাউন্সিলর ও বরো চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়েছেন।
কসবা এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। দীর্ঘদিন ধরে এখানে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল চলছে। সুশান্ত ঘোষ ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক দশক ধরে কাউন্সিলর ছিলেন এবং বর্তমানে ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন। এই দুটি ওয়ার্ডে গোষ্ঠীকোন্দল ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বেশ প্রকট হয়ে উঠেছে, যার কারণে কসবা এলাকার রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমেই উত্তেজিত হয়ে উঠছে। সুশান্তও এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অভিষেককে অবহিত করেছেন এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে সঠিক দিশা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, সুশান্ত কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। মেয়রের সঙ্গে বৈঠকের সময় সুশান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ফিরহাদ হাকিম তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি যথাসময়ে সুশান্তকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেবেন।
শুক্রবার রাতে গুলি করার চেষ্টা হওয়ার পর সুশান্তের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে সমর্থন এবং সহযোগিতা পাওয়া গেছে, তা দলের মধ্যে একত্রিত থাকার বার্তা দিচ্ছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলের শীর্ষ নেতারা সুশান্তের পাশে রয়েছেন, যা দলীয় ঐক্য এবং তার ভবিষ্যত রাজনৈতিক ভূমিকা নিশ্চিত করবে। এই ঘটনাগুলো কসবা অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং আগামীদিনে এর প্রভাব রাজনৈতিক মহলে আরও দৃশ্যমান হতে পারে।
শাসক দলের অন্তর্কলহ এবং কসবা অঞ্চলের রাজনৈতিক গোষ্ঠীকোন্দল আরও তীব্র হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে, তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সুশান্তের প্রতি এই সমর্থন তার ভবিষ্যত রাজনৈতিক পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।