ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড় রাজ্যরাজনীতি৷ এবার এই বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)৷ তিনি জানান, যে তার সরকার একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করেছে ট্যাব এবং মোবাইল ফোন ক্রয়ের জন্য সরকারী তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
মুখ্যমন্ত্রী(Mamata Banerjee) বলেন, “আমাদের প্রশাসন শক্তিশালী এবং কার্যকরী। এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত ছয়জনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত করব যে তদন্ত সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।” জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা মূলত মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থান থেকে এসেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) আরও উল্লেখ করেন যে, “এমন ধরনের চক্র প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই সক্রিয় রয়েছে।”
সরকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ট্যাবলেট বা মোবাইল ফোন ক্রয়ের জন্য অর্থ প্রদান করেছিল, যার পরিমাণ ছিল প্রতিটি উচ্চ মাধ্যমিক এবং দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০,০০০ টাকা। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী সেই অর্থ পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসারে, এই তহবিল অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং এসআইটি গঠন করে। মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানান যে, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে। ইতিমধ্যেই যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তে জানা গিয়েছে যে কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত একটি চক্র এই অর্থের অপব্যবহার করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মতে, এ ধরনের আর্থিক প্রতারণা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সরকারের সদিচ্ছার অপব্যবহার ঘটে। তাই এই ধরনের অপরাধ রোধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী কেনার জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল বঞ্চিত হওয়া শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের উন্নতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। মুখ্যমন্ত্রী(Mamata Banerjee) জানান যে, এই ধরনের কার্যকলাপ প্রতিরোধে সরকার সতর্ক এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অপরাধ আর না ঘটে, সে জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তদন্তকারী দল কেলেঙ্কারির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে। তারা জানতে চেষ্টা করছে কীভাবে এবং কারা এই তহবিলের অপব্যবহারের জন্য দায়ী। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ইতিমধ্যেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য রাজ্যের তদন্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে, যাতে অভিযুক্ত চক্রকে পুরোপুরি ধরা যায়।
সরকারি সূত্র জানায়, এই তহবিল সরকারি স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক এবং দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা উপকরণ কেনার জন্য ব্যবহার হওয়ার কথা ছিল। এটি শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষা সহজতর করতে সহায়তা করার জন্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই তহবিলের অপব্যবহার শিক্ষার্থীদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে পুনরায় প্রমাণ করেছে যে, প্রশাসন সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যবাসী যেন প্রতারণার শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
সমাজের প্রত্যেক নাগরিককে এ ধরনের প্রতারণা রোধে সতর্ক থাকা এবং প্রশাসনকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিশেষ তদন্তকারী দল আশা করা যায় শীঘ্রই এই কেলেঙ্কারির মূল কারণ উদঘাটন করে এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।