বিদ্যুতের বিপুল বিল বকেয়া। বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকার ধার শোধ না করলে সরবরাহ বন্ধ করা হবে এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদানি পাওয়ার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী ও বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানি। বাংলাদেশে লোডশেডিং বিপর্যয় নামছে? এমন প্রশ্নের সরগরম বাংলাদেশ। এ দেশের মুহাম্মদ ইউনূসের (Muhammad Yunus) নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে বিকল্প ব্যবস্থা।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানি়য়েছেন, যে কোনওরকম বিদ্যুৎ বিপর্যয় মোকাবিলা রুখতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়েছে আদানি পা়ওয়ার কোম্পানি। বিদ্যুৎ ঘাটতির চাপে থাকা বাংলাদেশ সরকার বলছে, সোমবার (৪ নভেম্বর) আদানির কিছু বকেয়া পরিশোধ করা হবে। এরপরও আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে তা মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
‘সমকাল’ সংবাদপত্র জানাচ্ছে, দেশের বিদ্যুৎ খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন আদানি একতরফা চুক্তির সুযোগ নিয়ে গত জুলাই থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার বাড়তি দাম ধরে বিদ্যুৎ বিল করার পাশাপাশি বকেয়ার জন্য বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে।
গত বছর উৎপাদন শুরুর আগেই কয়লার দাম ও চুক্তির শর্ত নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি)-এর পক্ষ থেকে আদানিকে কয়লার চড়া দাম দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। এরপর দাম কমাতে রাজি হয় আদানি। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম দামে কয়লা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেয় তারা। তবে এক বছর পর এখন আবার ২২ শতাংশ বাড়তি দাম চাইছে তারা। বকেয়া পরিশোধ না করার এটাও কারণ।
পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, আদানির যে বকেয়া রয়েছে, তার একটা পেমেন্ট সোমবার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেছেন, আমরা অক্টোবর মাসে ওদের (আদানি পাওয়ার) প্রায় ৯৮ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছি, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়া তাদের জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭ কোটি ডলারের এলসি করা হয়েছে। তারপরও তাদের এমন আচরণ খুব আশ্চর্যজনক, বিস্ময়কর এবং দুঃখজনক। আদানি সত্যিই বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিলে আমরা এটা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত আছি। গ্রাহকরা যাতে ভোগান্তির মধ্যে না পড়ে, সে জন্য আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আদানি গ্রুপ টাকা পায় এটা সত্য। তাদের পেমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে গতি বাড়ানো হয়েছে। আগের যেসব বিল বাকি আছে, তার জন্য মূলত দায়ী পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিশাল একটা ঘাটতি রেখে গিয়েছিল।