পুলিশ-স্ত্রীকে মারধরে অভিযুক্ত কনস্টেবল গ্রেপ্তার গল্ফগ্রিনে

গল্ফগ্রিন থানায় রাজ্য পুলিশের এক কনস্টেবলকে গার্হস্থ্য নির্যাতনের (West Bengal Police Domestic Violence) অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কনস্টেবলের নাম সুমন সিংহ। তার স্ত্রী কলকাতা…

West Bengal Police Domestic Violence

short-samachar

গল্ফগ্রিন থানায় রাজ্য পুলিশের এক কনস্টেবলকে গার্হস্থ্য নির্যাতনের (West Bengal Police Domestic Violence) অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কনস্টেবলের নাম সুমন সিংহ। তার স্ত্রী কলকাতা পুলিশের এ এস আই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, সুমন নিয়মিতভাবে তাকে মারধর করত।

   

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গল্ফগ্রিন থানায় একটি ফোন কল আসে। কলের মাধ্যমে জানা যায়, এক মহিলা গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এবং তিনি সাহায্য চান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা জানতে পারেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেই পুলিশের সদস্য। তখনই তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন।

পুলিশ যখন সুমনের বাড়িতে পৌঁছায়, তখন সেখানে মারধরের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের কর্মকর্তারা সুমনকে গ্রেপ্তার করেন। সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, শুধু স্ত্রীকেই নয়, তিনি গল্ফগ্রিন থানার পুলিশের একজন কর্মকর্তার সঙ্গেও অভব্য আচরণ করেছেন। এ বিষয়ে থানায় পৃথক একটি আলাদা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সুমন এবং তার স্ত্রী কয়েক বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে সবকিছু ঠিকঠাক চললেও, পরবর্তীতে সুমনের আচার-ব্যবহার এবং তার স্ত্রীর প্রতি নির্যাতন বাড়তে শুরু করে। স্ত্রী জানান, তিনি এ বিষয়ে বিভিন্ন বার সুমনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সুমনের অশান্তিপূর্ণ আচরণ পরিবর্তিত হয়নি।

স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গল্ফগ্রিন থানার পুলিশ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এবং সুমনকে গ্রেপ্তার করে। স্ত্রী পুলিশে চাকরি করেন বলে বিষয়টি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। কারণ, সুমন একজন পুলিশ সদস্য হয়েও একজন নারীকে নির্যাতন করছিলেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশী কর্তব্যরত কর্মকর্তার উপর আক্রমণের মামলা যোগ করা হয়েছে।

এই ঘটনার ফলে পুলিশ বাহিনীর ভিতরেই নারীর প্রতি নির্যাতনের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন পুলিশ সদস্য যদি এমন আচরণ করতে পারে, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত হবে? এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনায় কোনো দয়া করা হবে না এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনার পরপরই গল্ফগ্রিন থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ এবং আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেকেই স্ত্রীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে কোনো অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এখন অপেক্ষা করতে হবে তদন্তের ফলাফল ও বিচারিক প্রক্রিয়ার। এই ঘটনায় সুমনের স্ত্রী ও তার পরিবারের ওপর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের কথাও উঠে এসেছে। সমাজে যেভাবে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা খুবই জরুরি, যাতে এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।

সুমন সিংহের গ্রেপ্তারের পর, পুলিশের এই পদক্ষেপ প্রশংসিত হলেও, প্রশ্ন উঠেছে, একজন পুলিশ সদস্য হওয়ার পরও কেন তার আচরণ এই রকম হল। এটি শুধু একটি পরিবারকে নয়, বরং সমগ্র সমাজকে ভাবিয়ে তুলছে।