দীপাবলির পরের দিন দিল্লির আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে বিষাক্ত দূষণের স্তর (Delhi Air pollution)। সমীক্ষা অনুযায়ী, এই দূষণের মাত্রা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা রাজধানীর বাসিন্দাদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। শব্দবাজি, আতশবাজি, ও অন্যান্য উৎসবের উপকরণের তাণ্ডবে দিল্লির বায়ুমান অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে বাতাসের গুণমান বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি ৭ থেকে ১০টি পরিবারের মধ্যে অন্তত ১ জন এই দূষণের প্রভাব অনুভব করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দূষণের ফলে শিশু ও প্রবীণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
দূষণজনিত কারণে গলা ব্যথা বা কাশি, চোখে জ্বালাপোড়া, নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি উপসর্গ ক্রমবর্ধমানভাবে দেখা দিচ্ছে। সমীক্ষকদের মতে, দিল্লির বাতাসে বর্তমানে উপস্থিত ক্ষতিকর কণা ও গ্যাসগুলি সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে, যা পরবর্তীতে দীর্ঘস্থায়ী অসুখে পরিণত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, শব্দবাজি ও আতশবাজির ধোঁয়া কেবলমাত্র পরিবেশকে দূষিত করছে না বরং এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা এবং বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দীপাবলি উদযাপনের সময় উচ্চমাত্রার শব্দ দূষণ এবং ধোঁয়ার কারণে বাতাসে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য বিষাক্ত কণার মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।
এই ক্রমবর্ধমান দূষণ রোধ করতে বিভিন্ন সংস্থা এবং প্রশাসন বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যক্তিগত স্তরে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। দীপাবলির সময় বাজি ফাটানোর পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব উৎসব উদযাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা। দূষণের এই মারাত্মক প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বাড়ির মধ্যে বায়ু বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রের ব্যবহার, মুখে মাস্ক পরা এবং বাড়িতে থাকাকালীন দরজা-জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।
দিল্লির এই দূষণ পরিস্থিতি ভারতের অন্যান্য বড় শহরের জন্যও সতর্কবার্তা হিসাবে দেখা হচ্ছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে সবার একযোগে এগিয়ে আসা এবং উৎসব উদযাপনের সময় পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি গ্রহণই এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর একমাত্র রাস্তা।