ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস (UPI) নির্ভর ডিজিটাল লেনদেন অব্যাহত রেখেছে তার রেকর্ড-ব্রেকিং প্রবাহ। অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে ইউপিআই লেনদেন সংখ্যা পৌঁছেছে ১৬.৫৮ বিলিয়ন এবং মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩.৫ লাখ কোটি টাকাতে। ২০১৬ সালের এপ্রিলে ইউপিআই চালু হওয়ার পর থেকে এই সংখ্যাই সর্বাধিক।
জাতীয় পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই) জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবর মাসে লেনদেনের সংখ্যা বেড়েছে ১০ শতাংশ এবং মোট মূল্য বেড়েছে ১৪ শতাংশ। প্রতিদিনের গড় ইউপিআই লেনদেন সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৩৫ মিলিয়ন, যা মূল্য হিসাবে ৭৫,৮০১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
অন্যদিকে, ইমিডিয়েট পেমেন্ট সার্ভিস (IMPS) সেবার মাধ্যমে লেনদেনের সংখ্যা অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়েছে ৪৬৭ মিলিয়নে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৪৩০ মিলিয়ন। লেনদেনের মোট মূল্যও বেড়েছে ১১ শতাংশ, অর্থাৎ ৬.২৯ লাখ কোটি টাকা।
ফাস্ট্যাগের মাধ্যমে লেনদেনের সংখ্যা অক্টোবর মাসে পৌঁছেছে ৩৪৫ মিলিয়নে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৩১৮ মিলিয়ন। অক্টোবরের মোট লেনদেন মূল্য ছিল ৬,১১৫ কোটি টাকা। এই মাসে আধার-এনাবলড পেমেন্ট সিস্টেম (AePS) মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৬ মিলিয়নে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১০০ মিলিয়ন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিভাগের অর্থনীতিবিদ প্রদীপ ভূইয়াঁন-এর এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী, ভারতে ডিজিটাল লেনদেনের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কারণে নগদ অর্থের ব্যবহার ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত, ৬০ শতাংশ ভোক্তা ব্যয় এখনও নগদ অর্থের উপর নির্ভরশীল হলেও, ২০২১ সালে যেখানে ডিজিটাল পেমেন্টের অংশীদারিত্ব ছিল ১৪-১৯ শতাংশ, মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত তা বেড়ে হয়েছে ৪০-৪৮ শতাংশ। ইউপিআই এই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ইউপিআই লেনদেনের পরিমাণ ৫২ শতাংশ বেড়ে ৭৮.৯৭ বিলিয়ন হয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৫১.৯ বিলিয়ন। পাশাপাশি, লেনদেনের মোট মূল্য ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬.৬৩ লাখ কোটি টাকাতে।
এই তথ্যগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, ডিজিটাল লেনদেনের প্রতি জনগণের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং আগামী দিনে নগদ নির্ভরতা আরও হ্রাস পাবে।