শাসকদলের নেতার হাতেই আক্রান্ত মিনাখার তৃণমূল বিধায়ক ঊষারানী

মিনাখাঁর (Minakha) তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) ঊষারানি মণ্ডল এবং তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের উপর হামলার (Attacked) ঘটনা সম্প্রতি একটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে…

Minakha TMC MLA Attacked

short-samachar

মিনাখাঁর (Minakha) তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) ঊষারানি মণ্ডল এবং তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের উপর হামলার (Attacked) ঘটনা সম্প্রতি একটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে কালীপুজোর রাতে, যখন তারা স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে হাড়োয়া অটোস্ট্যান্ডের কাছে তাদের গাড়ি আটকে দেয় একদল দুষ্কৃতী। প্রথমে গাড়ির দিকে ইট ছোড়া হয়, পরে বিধায়ক এবং তাঁর স্বামীকে গাড়ি থেকে নামানো হয় এবং লাঠি দিয়ে আক্রমণ করা হয়। এই ঘটনায় বিধায়কের ডান পায়ে আঘাত লাগে এবং তাঁর স্বামীকেও মারধর করা হয়।

   

হামলার পর স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ঊষারানি। অভিযোগ রয়েছে, এই হামলার পেছনে তৃণমূলের এক নেতা খালেক মোল্লার হাত ছিল। খালেক মোল্লা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে, ঊষারানি নিজেই সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে হামলা করেছিলেন। তাঁর দাবি, বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগের সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে কৃষকদের জমি আত্মসাৎ সম্পর্কিত দ্বন্দ্ব।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমি আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। তারা জানান, ওই জমিগুলি বাজারে প্রতি বিঘায় ৪০-৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়, কিন্তু তারা সেই টাকার সুবিধা পাচ্ছেন না। অভিযোগ করা হয়, মৃত্যুঞ্জয় তাঁদের হুমকি দিয়ে বঞ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে বিধায়ক ঊষারানি বলেন, “আমি হাড়োয়া অটোস্ট্যান্ডে গেলে খালেক মোল্লা ও তাঁর দলের ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য আমাদের উপর হামলা চালায়। আমার পায়ে বড় রড দিয়ে আঘাত করা হয় এবং আমার সঙ্গীদেরও মারধর করা হয়।”

এদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্লা জানান, বিজেপি ও সিপিএমের এজেন্টরাই তৃণমূলের নেতাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এই অভিযোগ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করছে এবং শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে নিয়ে আসছে।

একই রাতে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে। সুকুমার অভিযোগ করেন, হামলার জন্য হাটগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আব্দুল কাদের মোল্লাকে দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, হামলার ঘটনাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল।

এই হামলা দুটি বিষয়কে স্পষ্ট করে তোলে, একটি হলো রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অন্যটি হলো স্থানীয় নেতাদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। এ ধরনের হামলার ঘটনা রাজ্যের শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি নতুন অধ্যায় শুরু করেছে। আপাতত, পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য প্রশাসন সতর্ক রয়েছে এবং তদন্ত চলছে। বিধায়কের উপর হামলার ঘটনায় কীভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়, সেটাই এখন দেখার।