জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) গোশালা মোড় সংলগ্ন ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরানি মন্দিরে (Debi Chowdhurani Temple) কালী পুজোর প্রস্তুতি জোরকদমে চলছে। সাড়ে ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই মন্দিরে কালী পুজোর (Kali Puja) রাতে মা কালীর সাজসজ্জা সম্পন্ন করেন মন্দিরের পুরোহিত। প্রতিবারের মতো এই বছরও রাত ৯ টা থেকে সারারাত ধরে চলবে কালী পুজো। একদিকে যেমন মন্দিরের পরিবেশ গা ছমছমে, অন্যদিকে হাজারো ভক্তের উপস্থিতি মন্দিরকে পরিপূর্ণ করে তোলে।
কালী পজোর রাতে এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় বাড়ে। জলপাইগুড়ির ভক্তরা বিশ্বাস করেন, মা দেবী এখানে এসে তাদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। এখানকার প্রাচীন রীতি এবং নিয়মাবলীকে সম্মান জানিয়ে, প্রতিবারের মতো এবারও পুরোহিত নিজ হাতে সাজান কালী মাকে। মন্দিরের চারপাশে ছায়াবৃক্ষের মতো বিশাল বটগাছ এবং প্রায় আড়াইশো বছর ধরে রুদ্রাক্ষ গাছের উপস্থিতি পরিবেশকে আরও মন্ত্রমুগ্ধ করে।
এ বছর কালী পুজো উপলক্ষে ভক্তদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মন্দিরের চারপাশে সুরক্ষা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে, দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের জন্য কালীপুজোর রাতে যথাযথ ব্যবস্থা করা হবে। তবে, কিছু ভক্ত মন্দিরে আসার আগে পুরোহিতের কাছ থেকে বিশেষ নির্দেশনা নিতে ভুলবেন না।
দেবী চৌধুরানি মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া যাক। এই মন্দিরটি স্থানীয় মানুষের কাছে বিশেষ গুরুত্ব রাখে। প্রতিবছর কালী পুজোতে ভক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। বলা হয়, এই মন্দিরে মা কালীর মূর্তি কষ্টিপাথরের তৈরি। পুজোর দিন ১৭১ টি মালসায় ভোগ দেওয়া হয়, যা মন্দিরের এক বিশেষ রীতি।
মন্দিরের পুরোহিত জানান, “এ বছর আমরা সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। মা কালীর পুজোতে সকল ভক্তকে স্বাগতম। আমাদের বিশ্বাস, এখানে এসে ভক্তরা তাঁদের সকল মনস্কামনা পূর্ণ করবেন।” জলপাইগুড়ির স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি প্রতিবেশী জেলাগুলির মানুষও এই পুজোতে অংশগ্রহণ করতে আসেন।
মন্দিরের চারপাশের পরিবেশ এবং পুরনো ঐতিহ্য ভক্তদের আকৃষ্ট করে। কালী পুজোর রাতে এখানে যে পরিমাণ ভক্ত সমাগম হয়, তা নিঃসন্দেহে একটি দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য। কালী পুজোর গুরুত্ব সম্পর্কে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “মা কালীর কাছে আসলে শান্তি এবং সমৃদ্ধি মেলে। আমরা এই মন্দিরে এসে সর্বদা মায়ের আশীর্বাদ গ্রহণ করতে চাই।”
এছাড়াও, মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে পুরোহিত জানান, “আমরা ভক্তদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। কেউ যেন কোনও ধরনের সমস্যা অনুভব না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।” জলপাইগুড়ির এই ঐতিহাসিক মন্দিরের প্রতি সকলের আকর্ষণ বরাবরই প্রবল। কালী পুজো উপলক্ষে ভক্তদের সমাগম বৃদ্ধির পাশাপাশি, মন্দিরের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যও সমৃদ্ধ হচ্ছে।