জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ওষুধ খাওয়ানোর পর প্রসূতির মৃত্যু, স্বামীর গাফিলতির অভিযোগ

জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর হাসপাতালের মাতৃ মা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে উঠল গাফিলতির অভিযোগ। স্বামী গৌরিপদ বর্মনের অভিযোগ, ভুল ওষুধ খাওয়ানোর ফলেই তার স্ত্রী…

Tragedy in Jalpaiguri

জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর হাসপাতালের মাতৃ মা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে উঠল গাফিলতির অভিযোগ। স্বামী গৌরিপদ বর্মনের অভিযোগ, ভুল ওষুধ খাওয়ানোর ফলেই তার স্ত্রী সুমিত্রা রায়ের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে বৃহষ্পতিবার রাতে, যখন একটি নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়ানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।

বৃহষ্পতিবারই প্রসবের নির্ধারিত দিন থাকায় সুমিত্রা রায়কে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের মাতৃ মা কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সুমিত্রার প্রসব প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি শুরু করে হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা। স্বামী গৌরিপদ জানান, চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থাতেই তার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি ঘটে। তার দাবি অনুযায়ী, রাত দশটা নাগাদ তার স্ত্রীকে একটি ওষুধ খাওয়ানো হয়, যেটির প্রভাবেই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সুমিত্রা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান।

   

গৌরিপদ বর্মনের অভিযোগ, “আমার স্ত্রীকে একটি ওষুধ খাওয়ানোর পরেই তার শরীর খারাপ হতে থাকে এবং সেই রাতেই সে মারা যায়। আমাদের বিশ্বাস, ভুল ওষুধের প্রয়োগের ফলেই এই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে। আমি নিশ্চিতভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করবো।” তিনি জানান, একসঙ্গে পরিবারে নবাগতকে স্বাগত জানাবার প্রস্তুতি চলছিল, অথচ এই দুর্ঘটনায় তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সুমিত্রার চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তারা কোনও তথ্য দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ করেন গৌরিপদ। তিনি বলেন, “কোনও সদুত্তর না পেয়ে আমি হতাশ হয়ে পড়েছি। আমার স্ত্রীর জীবনের সঙ্গে এমন অবহেলা হতে পারে কল্পনাও করতে পারিনি।”

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং কোনও গাফিলতি বা ভুল ওষুধের প্রয়োগ হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে অটোপসি রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, “এমন মর্মান্তিক ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সুমিত্রা রায়ের মৃত্যুর খবর দ্রুত জলপাইগুড়ি জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই গাফিলতির সম্ভাবনাকে সামনে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। স্থানীয়দের একাংশ বলেন, “আমরা চাই যেন দোষী কোনওভাবেই রেহাই না পায়। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে এমন বিপজ্জনক খেলা চলতে পারে না।”

গৌরিপদ বর্মন তার অভিযোগ দায়েরের জন্য পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সুমিত্রার মৃত্যুর কারণ নিয়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জেলা পুলিশ দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।