মির্জাপুরে ওভারহেডের তার ছেড়ে বিপত্তি, দিল্লি-হাওড়া রুটে ব্যাহত ট্রেন চলাচল

বুধবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর (Mirzapur) জেলার দগমগপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ঘটে এক বিপত্তি। ওভারহেডের তার ভেঙে যাওয়ার ফলে দিল্লি-হাওড়া রুটের (Delhi-Howrah Route) ডাউন লাইনটি কার্যত…

Mirzapur Incident

বুধবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর (Mirzapur) জেলার দগমগপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ঘটে এক বিপত্তি। ওভারহেডের তার ভেঙে যাওয়ার ফলে দিল্লি-হাওড়া রুটের (Delhi-Howrah Route) ডাউন লাইনটি কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। খবর অনুযায়ী, ট্রেন নম্বর ১২৮১৬ নন্দন কানন এক্সপ্রেস সন্ধ্যা ৭.১০ মিনিটে দগমগপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পৌঁছানোর সময় ট্রেনের পেট্রোগ্রাফ ওভারহেডের তারে জড়িয়ে পড়ে তার ছিঁড়ে যায়। এই ঘটনায় ডাউন লাইনের সব ট্রেনের চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।

ট্রেন থামার পর চালক তৎক্ষণাৎ কন্ট্রোল রুম প্রয়াগরাজে খবর দেন। এরপর টিআরডি (ট্র্যাক মেনটেনেন্স ডিপার্টমেন্ট) বিভাগের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং মেরামতের কাজ শুরু করেন। যাত্রীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে আপ লাইনে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রাখা হয়। তবে ডাউন লাইনে আটকে থাকা ট্রেনগুলোকে ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।

   

মির্জাপুরের আরপিএফ (রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স) অফিসার দীনেশ কুমার এই ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সন্ধ্যা ৭.১০ নাগাদ ডগমাগপুর রেলস্টেশনের কাছে তার ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে ডাউন লাইনে প্রভাবিত পড়েছে। মেরামতের কাজ চলছে এবং যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

এই ঘটনায় যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা। অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন যে, তারা দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ জরুরি কাজে কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আপ লাইনে চলাচল অব্যাহত থাকলেও যাত্রীদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ক্ষিপ্রা এক্সপ্রেস এবং কালিকা ও সীমাঞ্চল ট্রেনগুলোকে চুনার ও মির্জাপুর রেলস্টেশনে থামানো হয়েছে। বর্তমানে ডাউন লাইনের মেরামতের কাজ চলছে এবং কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, শীঘ্রই কাজ শেষ হবে।

যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অনেকে সামাজিক মিডিয়ায় রেলের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে তথ্য জানাচ্ছেন এবং আপডেট চাইছেন। রেল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতি অনুরোধ করেছেন যে, তারা যাতে অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো নিয়মিত চেক করেন এবং সব তথ্য সেখান থেকেই পেয়ে যাবেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, স্থানীয় প্রশাসনও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তারা নিশ্চিত করতে চাইছেন যে, যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সুবিধা কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্টেশনে জরুরি সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যাতে করে যাত্রীরা খাবার ও পানীয় পান করতে পারেন।

বিপর্যয়ের ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি উপলব্ধি করে রেল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট রয়েছে। তারা আশা করছেন যে, মেরামতের কাজ সম্পন্ন হলে ট্রেন চলাচল আবার স্বাভাবিক হবে। তবে, এ ঘটনায় যাত্রীদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হলো যে, রেলযাত্রায় বিপর্যয়ের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে এবং তথ্যের জন্য অফিসিয়াল চ্যানেলগুলোতে নজর রাখতে হবে।

এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে, ট্রেন চলাচলে কোনো ধরনের বিপর্যয় ঘটলে সাধারণ মানুষ কেমন অসুবিধার মধ্যে পড়তে পারে। কর্তৃপক্ষের উচিত, এমন পরিস্থিতির মোকাবিলায় আরও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং যাত্রীদের সুরক্ষা সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া।