১৪ দিন পর অনশনকারীদের সঙ্গে কথা মুখ্যমন্ত্রীর, অনশনমঞ্চে হাজির স্বরাষ্ট্রসচিব-মুখ্যসচিব

ধর্মতলায় লাগাতার অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors Hunger Strike)। তাঁদের ১০ দফা দাবি মানা না অবধি তাঁরা এই অনশন চালিয়ে যাবেন বলে…

After 14 days, the Chief Minister spoke with the hunger strikers, while the Home Secretary and Chief Secretary were present at the protest stage.

ধর্মতলায় লাগাতার অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors Hunger Strike)। তাঁদের ১০ দফা দাবি মানা না অবধি তাঁরা এই অনশন চালিয়ে যাবেন বলে এর আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। এরই মধ্যে শনিবার দুপুরে ধর্মতলার ধর্ণাস্থলে এসে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। জুনিয়র চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারির ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে ধর্নাস্থলে আসেন তাঁরা। সেই অনশনমঞ্চে স্বরাষ্ট্রসচিব ও মুখ্যসচিবের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।

সেখানে আসার পরেই অনশনে বসা জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctors Hunger Strike) সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যসচিব। তাঁকে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন, ১০ দফা দাবি আদায়ে অনড় থাকবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সামনেই ওঠে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। কিন্তু অনশনমঞ্চে প্রশাসনিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আসাতে সরকার ও চিকিৎসকদের মধ্যে জট কাটিয়ে আজকে সমাধান সূত্র বেরোবে কিনা সেই চিন্তায় যখন মানুষ মশগুল ঠিক তখনই মুখ্যসচিবের মাধ্যমে ফোনে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।

   

শনিবার জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অনশনরত চিকিৎসকদের উদ্যেশ্যে জানিয়েছেন, “আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। আমি আন্দোলনকারীদের সময় দিয়েছি, সাধ্যমতো যতটা পারব সহায়তা করব। বেশিরভাগ দাবিই পূরণ করেছি। প্রথম ৫টি দাবির মধ্যে ৪টি দাবিই পূরণ করা হয়ে গিয়েছে। সামনে ছোটপুজো, দীপাবলি, উপনির্বাচন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দিন। একসাথে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে নির্বাচন হবে। আপনাদেরও সামনে পরীক্ষা আছে। আমি মানবিকতার পক্ষে, তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দিন।”

এরপরে মমতা চিকিৎসকদের কাছ থেকে কয়েকমাস সময় চেয়ে নিয়ে বলেন, “আন্দোলনকারীদের দাবির সঙ্গে আমার কোন বিরোধ নেই। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই পুলিশ কমিশারকে সরানো হয়েছে। আমাকে ৩-৪ মাস সময় দিন। কোর্টে কেস চলছে, জাস্টিস মিলবে।” সেইসঙ্গে চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা না পেলে মানুষ কোথায় যাবে? এর পাশাপাশি আজ জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন আন্দোলন থেকে সরে আসার আর্জি জানিয়ে অনশন প্রত্যাহার করে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা প্রথমে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এরপর অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে জুনিয়র চিকিৎসকরা মমতাকে সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা ১০ দফা দাবি আদায়ে অনড় থাকবে এবং সেইসঙ্গে তাঁরা ফের মুখ্যমন্ত্রীকে একবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। আন্দোলনকারীদের কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে আসার জন্য তাঁদেরকে সময় দিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, যাতে ১০ জনের বেশি আন্দোলনকারী সোমবার নবান্নে না আসেন। তবে এখানেই শেষ নয়। আজকে ফোনালাপে নিজেদের ১০ দফা দাবি মুখ্যমন্ত্রীকে বিস্তারে জানান অনশনকারীরা।

সেখানে ধর্ণাস্থলে স্বাস্থ্যসচিবকে অপসারণের দাবি তুললে আন্দোলনকারীদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যসচিবকে অপসারণ করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সব দাবি পূরণের ব্যাপারটা তিনি খতিয়ে দেখলেও স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ করার দাবিটি মানা হবে না। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, “স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে। কেন্দ্রীয় রেফারেল ব্যবস্থার পাইলট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওবিসি সংরক্ষণ মামলা আদালতে বিচারাধীন, সে কারণে পুলিশে নিয়োগ থমকে আছে।”

এদিকে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি মানলে তবেই অনশন শেষ হবে। সেইসঙ্গে হাসপাতালে সিভিকের পরিবর্তে স্থানীয় পুলিশ কর্মী নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।