IIFA Awards এর অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন টোটা রায় চৌধুরি, কী বললেন অভিনেতা?

আবু ধাবি-তে তিনদিন ব্যাপি IIFA Awards শো তে চাঁদের হাট বসেছে। বলিউড থেকে শুরু করে ভারতের নামী সেলিব্রেটিরা ডাক পেয়েছিলেন । সেখানেই বাংলার তথা বাঙালির…

tota roy chowdhury

আবু ধাবি-তে তিনদিন ব্যাপি IIFA Awards শো তে চাঁদের হাট বসেছে। বলিউড থেকে শুরু করে ভারতের নামী সেলিব্রেটিরা ডাক পেয়েছিলেন । সেখানেই বাংলার তথা বাঙালির প্রতিনিধি হিসাবে হাজির হয়েছেন টোটা রায় চৌধুরি (Tota Roy Chowdhury)। বর্তমানে ব্যস্ততম অভিনেতাদের মধ্যে একজন হচ্ছে টোটা। তার হাতে রয়েছে একের পর এক হিন্দি প্রজেক্ট । করণ জোহরের রকি অউর রানি-কি প্রেম কাহানি ছবিতে আলিয়ার বাবার চরিত্রে দারুন অভিনয় করে বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করেছেন টোটা। রকি অউর রানি-কি প্রেম কাহানি ছবির সুবাদে সেরা সহ অভিনেতা হাসাবে মনোনিত হয় টোটা। অ্যাওয়ার্ড না পেলেও IIFA Awards শো তে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন অভিনেতা।

টোটা (Tota Roy Chowdhury) তার সামাজ মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আবু ধাবি’তে IIFA Awards এ আমন্ত্রিত ছিলাম। Best Supporting Actor বিভাগে ধর্মেন্দ্র’জি, অনিল কাপুর, গজরাজ রাও, জয়দীপ আহলাওয়াত-দের সঙ্গে আমারও nomination ছিল। না, পুরস্কৃত হইনি, ট্রফিটি অনিল কাপুর এর হাতেই উঠেছে, তবে এত বিখ্যাত ও দিকপাল অভিনেতাদের পাশাপাশি আমিও যে তালিকাভুক্ত ছিলাম সেটাই আমার কাছে award-সম।
Award show কাকে বলে সেটা প্রকৃতরূপে গতকাল প্রত্যক্ষ করলাম। Etihad Arenaতে ১৮,০০০ দর্শক সমাগম, চোখ ধাঁধানো স্টেজ, মাখন-মসৃণ ব্যবস্থাপনা ও তৎসহ শাহরুখ খান এর শুরু থেকে শেষ অবধি হাই ভোল্টেজ উপস্থাপনা ও মঞ্চ উপস্থিতিতে উদ্বেলিত আট থেকে আশি, শাহিদ কাপুরের dance performance; আমি শুধু “থ” নয়, দ, ধ, ন !!!

   

ঢোকার মুখে প্রেস কর্নারে মুম্বাইয়ের এক মহিলা বাঙালি সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন যে IIFA তো দক্ষিণের চার ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে award function করছে। একসময় এই হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিকে বাঙালিরাই পথ দেখিয়েছিল। এখন হিন্দি কোন সুদূরে এগিয়ে গেছে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সদস্য হয়ে আফসোস হয় না যে কেন IIFA বাংলা ছবি নিয়ে কোনো award show করে না? দেখলাম প্রায় পঞ্চাশ জন সাংবাদিক, যে যা করছিলেন সেটা থামিয়ে আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে। হেডলাইটে হরিণ না হয়ে ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিলাম, “তাঁদের অগ্রগতি আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সবাই মিলে প্রচেষ্টা করব যাতে হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করা যায়।” উত্তর শুনে কন্যা তখন মিটিমিটি হাসছেন। ভাবখানা এই যে, গুগলি দিলাম বটে তবে মন্দ খেললে না।

অবশ্য রাতে ফিরে ডিনারের পর পায়চারি করতে করতে প্রশ্নটা ভাবালো। সত্যিই তো, একটা সময় আমরাই পথপ্রদর্শক ছিলাম। রায়, সেন, ঘটক-দের কথা ছেড়েই দিলাম। অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের “নিশিপদ্ম” (অমর প্রেম) বা অগ্রদূত এর “ছদ্মবেশী” (চুপকে চুপকে ) এর মত অনেক বাংলা ছবির হিন্দি রিমেক এক সময়ে ভারত কাঁপিয়ে ব্যবসা করেছে। এক দশক আগেও ঋতুদার, ঋতুপর্ণ ঘোষের, ছবিগুলো বহু ভাষাভাষীর দর্শক দেখতেন এবং সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতেন। কোথায় আমাদের ত্রুটিবিচ্যুতি হলো বা কি করলে পূর্বস্থান পুনর্দখল করতে পারি তা নিয়ে আত্মবিশ্লেষণ ও আত্মসমালোচনার আশু প্রয়োজন। কবে ঘি খেয়েছি বা ঘি-চপচপে পোলাও বিতরণ করেছি সেটা বারংবার বমন করে বাকিদের বিরক্তির ও করুণার পাত্র হয়ে এক ইঞ্চিও অগ্রগতি হবে না।

আমার মনে হয় গত দশ-বারো বছরে আমরা যেন চিন্তাধারায়, মানসিকতায় ও কর্মে খুবই ক্ষুদ্র ও সংকীর্ণ হয়ে উঠেছি। অন্যকে ছোট করে নিজেকে বড় প্রমাণিত করার দৌড়ে এটা ভুলে গেছি যে নিজেকে বৃহৎ করেও কিন্তু অন্যকে খর্ব করা যায়। অবশ্য দ্বিতীয়টি অপেক্ষাকৃত অনেকটাই কঠিন। সেটা করতে গেলে প্রথমেই ঈর্ষা ত্যাগ করে স্বীকার করে নিতে হয় যে প্রতিযোগীর কাজ তুলনায় উচ্চমানের। তারপরে উন্নতিসাধনে প্রতিনিয়ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা। সেগুলো করার প্রাথমিক শর্ত হলো সত্যের সম্মুখীন হওয়ার বাত্যার সাহস ও ব্যাপ্ত হৃদয়। আমাদের পূর্বসূরিদের হয়তো তাঁদের কিছু উত্তরসূরিদের মত german গাড়ি, swiss ঘড়ি, french পারফিউম, italian স্যুট, greek vacation, বহুতলে দক্ষিণখোলা ছিল না কিন্তু মনখোলা, প্রাণখোলা ছিলেন বলে মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করতেন আর তাই আমরা তাঁদের মনেপ্রাণে স্থান দিয়েছি।’