বাগানের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে বিধ্বস্ত বায়ুসেনা, ছয় গোলের ‘তোপ’ মেরিনার্সদের

মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan Super Giant) হেড কোচ হোসে মলিনার জন্মদিনে স্পেশাল গিফট দিল মেরিনার্সরা। বৃহস্পতিবার চলতি ডুরান্ড কাপে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের বিরুদ্ধে খেলতে…

Mohun Bagan Super Giant

মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan Super Giant) হেড কোচ হোসে মলিনার জন্মদিনে স্পেশাল গিফট দিল মেরিনার্সরা। বৃহস্পতিবার চলতি ডুরান্ড কাপে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল বাগান ব্রিগেড। এই ম্যাচে পালতোলা নৌকার দল ৬-০ গোলে জয়লাভ করল। ম্যাচে জোড়া গোল করলেন জেসন কামিন্স। এছাড়া একটি করে গোল করেন টম অলড্রেড, লিস্টন কোলাসো, অনিরুদ্ধ থাপা এবং গ্রেগ স্টুয়ার্ট। ডার্বি ম্যাচের আগে এই জয় মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাস যে অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে, তা নিশ্চিন্তে বলা যেতেই পারে। এবার ম্যাচের বিস্তারিত আলোচনায় আসা যাক।

এই ম্যাচের প্রথমার্ধ যে একেবারে মোহনবাগানের পকেটে ছিল, সেটা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথম ৪৫ মিনিটে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এই ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে থাকেন হোসে মলিনার দল। মাত্র ৪ মিনিটে গোলের দরজা খুলে দেন জেসন কামিংস। ম্যাচের শুরু থেকেই ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স চাপে পড়ে যায়। আর সেই সুযোগটাই মোহনবাগান নিতে শুরু করে। সাহাল নিখুঁতভাবে বলটা বক্সের মধ্যে পাঠিয়ে দেন। নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন জেসন কামিন্স। তিনি বলটাকে বিপক্ষের জালে জড়াতে কোনও ভুল করেননি।

   

প্রথম গোলের ধাক্কা কাটাতে না কাটাতেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ১০ মিনিটে বাগানের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করলেন টম অলড্রেড। বক্সের মধ্যে বলটা পাঠিয়েছিলেন লিস্টন কোলাসো। তিনি হেড দিয়ে গোল করার চেষ্টা করেছিলেন বটে, কিন্তু গোলকিপার প্রথম চেষ্টায় তা আটকে দেন। কিন্তু, বলটা প্রতিহত হয়ে টম অলড্রেডের কাছে চলে আসে। অলড্রেড কার্যত চোখ বন্ধ করে দলের স্কোর ২-০ করে দেন। প্রসঙ্গত, এই ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। আগামী ১৮ অগস্ট কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। চলতি ডুরান্ড কাপের সেই মহাকাব্যিক লড়াইয়ের আগে প্রতিপক্ষকে কার্যত মেপে গেলেন লাল-হলুদ কোচ।

প্রথমবার লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও, দ্বিতীয়বার আর সুযোগ মিস করেননি লিস্টন। ৩৮ মিনিটে তিনি মোহনবাগানকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দিলেন লিস্টন কোলাসো। সাহালের থ্রু বলে তিনি শুধুমাত্র পা ছোঁয়ালেন। আর তাতেই কেল্লাফতে। এই নিয়ে বায়ুসেনার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় গোলে অ্যাসিস্ট করলেন সাহাল। এই পরিস্থিতি থেকে এয়ার ফোর্স যে কোনওভাবেই কামব্যাক করতে পারবে না, সেই ছবিটা সকলের কাছেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই টম অলড্রেডের পরিবর্তে মাঠে নামলেন অ্যালবার্তো রডরিগস। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে আসে চতুর্থ গোল। এবার গোলদাতা অনিরুদ্ধ থাপা। অনিরুদ্ধ মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে মাঠে নেমেই কাজের কাজটা করে দিলেন। নাম তুলে ফেললেন স্কোরশিটে! আসলে লিস্টনকে উদ্দেশ্য করে সাহাল একটা থ্রু বল বাড়িয়েছিলেন। লিস্টনের শট আরও একবার আটকে দিল বিপক্ষের গোলকিপার। কিন্তু, ফিরতি বলটা অনিরুদ্ধর পায়ে চলে আসে। অবশেষে থাপা একটি হাফভলি করে বলটা নেটের মধ্যে জড়িয়ে দেন। সেইসঙ্গে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় মোহনবাগান।

ম্যাচের ৭৬ মিনিটে আসে পঞ্চম গোল। পাশাপাশি এই ম্য়াচে দ্বিতীয় গোলটি করলেন জেসন কামিন্স। বক্সের সামান্য বাইরে থাকা মনবীরকে লক্ষ্য করে বলটা বাড়িয়েছিলেন সেই সাহাল। তিনি কার্যত ফ্লিক করে বলটা কামিন্সের কাছে পাঠিয়ে দেন। বাগানের এই অজি ফরোয়ার্ড কয়েক পা সামনে এগিয়ে এসে নিখুঁত ছোঁয়ায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের পাঁচ নম্বর গোলটা করে ফেললেন। ৮২ মিনিটে সাহাল নিজে একটি গোল করার চেষ্টা করলেও, অল্পের জন্য় তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যান।

অবশেষে বাগানের হয়ে এই ম্য়াচে হাফডজন গোলের সাক্ষী রইলেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট। ৯০+১ মিনিটে দলের হয়ে ষষ্ঠ গোলটা করে ফেললেন। প্রথম কামিন্সের সঙ্গে ওয়ান-টু শটে বলটা নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষপর্যন্ত স্কটিশ ফুটবলার দুর্দান্ত একটি শট মারেন। সেইসঙ্গে বাগানের স্কোর ৬-০ হয়ে যায়। দলের জয়ে বাগান সমর্থকরা যারপরনাই খুশি হয়েছেন।