‘আবার আসবেন…’ বলেছিলেন বুদ্ধবাবু, ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনা শোকাচ্ছন্ন

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: সেদিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অদূরে দাঁড়িয়ে। পাশে অসীম দাশগুপ্ত। সামনে শায়িত বিশ্বের অন্যতম আলোচিত কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসু। লাল পতাকার উপরে জাতীয় পতাকায় ঢাকা…

Sheikh Hasina on Buddhadeb Bhattacharjee Death, বুদ্ধদেবের প্রয়াণে শোক প্রকাশ শেখ হাসিনার

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: সেদিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অদূরে দাঁড়িয়ে। পাশে অসীম দাশগুপ্ত। সামনে শায়িত বিশ্বের অন্যতম আলোচিত কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসু। লাল পতাকার উপরে জাতীয় পতাকায় ঢাকা তাঁর দেহ। ঠিক পায়ের কাছে ছলছলে চোখে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা। পিছনে রাশেদ খান মেনন। প্রথামাফিক বাংলাদেশ সরকারের তরফে শ্রদ্ধা জানালেন ততকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ক্ষণিকের বেদনাতুর মুহূর্ত। শায়িত জ্যোতি বসুর পাশ থেকে সরে আসতেই বাইরে অপেক্ষারত হাজার হাজার জনতার দিকে হাত তুলে বেরিয়ে যাচ্ছেন, তখনই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বললেন ‘আবার আসবেন কিন্তু’। সম্মতি জানিয়ে হাসিনা বললেন, ‘নিশ্চই আসব’। ভিভিআইপি অতিথিকে নিয়ে ভারত সরকারের বিশেষ নিরাপত্তায় কনভয় চলে গেল বিমানবন্দরের পথে।

২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি জ্যোতি বসুর দেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানোর দিন কলকাতায় এসেছিলেন শেখ হাসিনা। তারপর বেশ কয়েকবার পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন তিনি। জ্যোতি বসুর প্রয়াণের এক বছর পরেই (২০১১) পশ্চিমবঙ্গে বাম জমামার পতন হয়। এরপর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বুদ্ধবাবু। এক চিলতে ফ্ল্যাটবন্দি জীবন চলতে শুরু করেছিল। কূটনৈতিক নিয়মের মধ্যে থেকে কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবেশ থেকে সেই ‘খবর’ পেতেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সর্বশেষ নির্বাচনে পুনরায় শেখ হাসিনার জয় সংবাদ মারফত স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যর মুখ থেকেই শুনেছিলেন বুদ্ধবাবু।

   

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বুদ্ধদেবের শেষকৃত্য, ঘোষণা মমতার, কী জানালেন সেলিম?

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভে পতন হয়েছে শেখ হাসিনার শাসন। তিনি দেশত্যাগী। ভারতে আশ্রিত। নয়াদিল্লিতে ভারত সরকারের বিশেষ নিরাপত্তায় শেখ হাসিনা আছেন। জানা গেছে, ভারত সরকারের প্রটোকল অফিসারের কাছেই কমি়উনিস্ট নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রয়াণ সংবাদ পান তিনি। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানন্ত্রী। শোকাচ্ছন্ন তিনি।

বুদ্ধ প্রয়াণে মর্মাহত মমতা, সমবেদনা মীরা দি-সুচেতনা ও CPIM কর্মীদের

ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের খতিয়ানে পশ্চিমবঙ্গের টানা ৩৪ বছরের সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারের ভূমিকা ঢাকায় বহুল আলোচিত হয়। দুই মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বরাবর ‘বাংলাদেশ সম্পর্ক’ বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নোট দিতেন। কূটনৈতিক মহলে এ বিষয়টি ছিল বিশেষ আলোচিত।

‘আসবেন কিন্তু’ সেদিন বলেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ঘটনাচক্রে নির্বাসিত শেখ হাসিনা ভারতে এসেছেন কিন্তু কূটনৈতিক কারণে আর ‘আসতে পারবেন না’ সরাসরি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।