কথাতেই রয়েছে, কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। লকডাউন বা অতিমারির (Covid 19) সময়েও এই প্রবাদের কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। তথ্য বলছে, সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ ধনী থেকে আরও ধনী হয়েছে৷ অন্য দিকে ‘পুওর’দের সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
সর্বভারতীয় এক পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এক সমীক্ষার রিপোর্ট। মনে করা হচ্ছে, অতিমারি (Pandemic) আবহে ভারতবর্ষের প্রায় ৪.৬ কোটি মানুষ প্রবেশ করতে চলেছেন চরম দারিদ্র সীমার বিভাগে। বেড়েছে বড়লোকেদের সংখ্যা। আগে ১০২ জন ‘বিলিয়নএয়ার’ ছিলেন ভারতে। অতিমারি আবহে সংখ্যা বেড়ে ১৪৩।
২০২১ সালে ভারতের প্রথম ১০০ জন ধনী ব্যক্তির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা। মার্চ ২০২০ থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর, এই সময়কালে বিরাট লাফ দিয়েছে তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ৷ আগে মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২৩.১ লক্ষ কোটি। পরে হয়েছে ৫৩.২ লক্ষ কোটি। ২০২১ সালে সাধারণ মানুষ যতটা আয় খুইয়েছিলেন, ধনী ব্যক্তিদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ তার প্রায় ৮৪ শতাংশ। ভারতের ৫৫৫ মিলিয়ন গরীব মানুষের যে সম্পত্তি রয়েছে, সেই একই পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে মাত্র ৯৮ জনের কাছে (৬৫৭ বিলিয়ন মার্কিন মুদ্রা)। ১০ জন সেরা ভারতীয় বড়লোক প্রতিদিন যদি ১ মিলিয়ন ডলার খরচ করেন, তাহলেও তাঁর মোট সম্পত্তি শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় ৮৪ বছর।
আন্তর্জাতিক স্তরেও ‘অতিমারি আবহে অর্থনীতি’ শীর্ষক আলোচনা হয়েছে। সেখানেও দেখা হয়েছে করোনা-আমলে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র সীমায় নেমে গিয়েছে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ। চাকরি হারিয়ে, ব্যবসায় মার খেয়ে বহু মধ্যবিত্ত পরিবার নেমে এসেছেন গরীব কোঠায়। আবার বহু গরীব মানুষ এখন চরম দারিদ্র সীমার আওতায়।
ভারতে বিজেপি শাসন ব্যবস্থায় সম্পত্তির এই অসম বন্টন বাস্তবিক দৃষ্টি-কটূ। ফুলেফেঁপে উঠেছেন সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ৷ তলিয়ে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত এবং গরীব। ডানপন্থী শাসন ব্যবস্থায় পুঁজিবাদীদের স্বর্গরাজ্য।