‘হাসিনার দুঃশাসনের শেষ’ লিখলেও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার নিয়ে আশঙ্কিত তসলিমা

জনতার ভয়ে পলাতক শেখ হাসিনা। পাকিস্তান কেটে বাংলাদেশ তৈরির পর এই প্রথম কোনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে পালালেন। বিবিসির খবর, পালানোর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ…

Taslima Narsin is worried about the secular government in Bangladesh despite the fall of Hasina's government, 'হাসিনার দুঃশাসনের শেষ' লিখলেও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার নিয়ে আশঙ্কিত তসলিমা

জনতার ভয়ে পলাতক শেখ হাসিনা। পাকিস্তান কেটে বাংলাদেশ তৈরির পর এই প্রথম কোনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে পালালেন। বিবিসির খবর, পালানোর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ জমা দেন তিনি। সবমিলে গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রবল শক্তিশালী সরকারের পতন হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা কার্যত নির্বাসনে। তাঁকে কটাক্ষ করে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন লিখেছেন,- “হাসিনার দুঃশাসনের সমাপ্তি হলো।”

ঘটনাচক্রে শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই তসলিমা নাসরিনকে বাংলাদেশ সরকার নির্বাসনে পাঠায়। তসলিমা তাঁর বইগুলিতে লাগাতার ধর্মীয় মৌলবাদ ও রক্ষণশীলতার বিষয়ে সরব ছিলেন। সেই কারণে বাংলাদেশের ইসলামি সংগঠনগুলি বিক্ষোভ শুরু করেছিল। তাদের চাপের মুখে শেখ হাসিনার নির্দেশে তসলিমাকে নির্বাসিত করা হয়। এরপর থেকে তিনি ভারত ও ফ্রান্সে থাকেন।

   

বাংলাদেশ চালাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ঘোষণা সেনাপ্রধানের, প্রতিটা অন্যায়ের বিচারের আশ্বাস

নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন লাগাতার যে কোনও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সরব। তিনি বারবার লিখেছেন শেখ হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ভুয়ো। তসলিমার অভিযোগ, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ইসলামি মৌলবাদীদের বাড়তে মদত দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, একদিন এই মৌলবাদীরাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।

ওপার বাংলায় ওলটপালট! এ বাংলায় ফের বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা

সোমবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস মোড় নিয়েছে। সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যু ঘিরে ছাত্র আন্দোলন থেকে যে গণবিক্ষোভ ছড়িয়েছিল তাতে গত দুমাস ধরে রক্তাক্ত বাংলাদেশ। সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে শতাধিক নিহত। প্রবল গণবিক্ষোভে সরকারের পতন হয়ে গেছে। ২০২৪ সালের ৫ জুলাই এই দিনটি বাংলাদেশের তথা বিশ্বের রাজনৈতিক দিনপঞ্জিতে লাল অক্ষরে লেখা হয়ে গেছে।

দেশ থেকে বিতাড়িত! বিশেষ বিমানে ভারতে পৌঁছলেন হাসিনা, নিতে পারেন আশ্রয়!

১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙে রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের পর যে বাংলাদেশ তৈরি হয়েছিল তার অন্যতম নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শেখ হাসিনার পিতা। আর বারবার ক্ষমতা দখল করে শেখ হাসিনা হয়েছিলেন ‘অদ্বিতীয়া জননেত্রী’। তাঁর পিতাকে সেনা অভ্যুত্থানে খুন করা হয়। আর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে জনতার ভয়ে পালালেন।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, আরও একবার সেনার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ!

তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, “হাসিনার মাফিয়া, হাসিনার ফ্যাসিজম আর নার্সিসিজমের যুগ শেষ হলো। এখন যে সরকারই আসুক, যেন মৌলবাদবিরোধী সরকার আসে। যেন ধর্মনিরপেক্ষ সরকার আসে।”

তসলিমার আশঙ্কা বাংলাদেশে “শেখ হাসিনার দুঃশাসন” শেষ হলেও দেশটিতে ধর্মীয় মৌলবাদের ভয়াবহ রূপ দেখা যাবে। ক্ষমতাচ্যুত হবার আগে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে জামাত ইসলাম মতো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেন। তসলিমা নাসরিনের আশঙ্কা, সেই নিষেধাজ্ঞা আর থাকবে না। তসলিমার আশঙ্কা মিলে গেছে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উস জামানের সাংবাদিক সম্মেলনেই। শেখ হাসিনার দেশত্যাগ প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে অংশ নিয়েছিল জামাত ইসলামি। সবাইকে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গড়ব।