শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) পদত্যাগ দাবিতে বাংলাদেশে (Bangladesh) রক্তাক্ত রবিবার। একদিনে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত। আরও নিহতের সংখ্যা বাড়বে বলে ঢাকার সব সংবাদ মাধ্যম দাবি করছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি বাংলাদেশে। হামলায় সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার ১৩ পুলিশকর্মী খুন! নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ছে।
নিহত আন্দোলনকারীদের মধ্যে সিংহভাগ গুলিবিদ্ধ। অভিযোগ, ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন রুখতে সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের সমর্থকরা প্রকাশ্যে পুলিশের সামনেই গুলি চালাচ্ছে। পাল্টা অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে নাশকতা চালিয়ে দেশবিরোধী অভ্যুত্থানে সামিল বিভিন্ন গোষ্ঠী। আন্দোলনকারীদের দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই।
রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধদের সংখ্যা সর্বাধিক। অন্যান্য বিভাগ সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা, বরিশালেও তীব্র সংঘর্ষ। সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে আন্দোলন ঘিরে গত জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশে দুশো অধিক জনের বেশি মৃত। যাদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।
সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে তৈরি হওয়া বাংলাদেশের পড়ুয়াদের আন্দোলন এখন সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভে পরিণত। তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রবিবার থেকেই অনির্দিষ্টকালীন কারফিউ জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। একইসঙ্গে আগামী তিনদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
সেনাপ্রধানসহ তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত দীর্ঘ বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বার্তা দেন। এরপরেই পড়ুয়াদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঞ্চের তরফে ঘোষণা করা হয় সোমবার দেশবাসী যেন রাজধানী ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করেন।
আন্দোলনকারীদের ঢাকা অবরুদ্ধ করার এই বার্তায় এবার কারফিউ ভেঙে জমায়েত হতে চলেছে সোমবার। লং মার্চ মঙ্গলবার হবার কথা ছিল। কারফিউ ঘোষণার পরেই কর্মসূচির দিন পরিবর্তন করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের তরফে সেনাবাহিনীকে গুলি না চালানোর বার্তা দেওয়া হয়। শনিবারই বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আগেই ঘোষণা করেছেন ‘জনগণের পাশে থাকবে সেনা’ অভিযোগ, পড়ুয়াদের আন্দোলন থামাতে সরকারে থাকা দল আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠন ছাত্র ও যুব লীগ সদস্যরা হামলা করেছিল। সেই হামলার প্রত্যাঘাত শুরু করেন পড়ুয়ারা। রক্তাক্ত এই সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের গুলি চালানো পক্ষপাতদুষ্ট বলে আন্দোলন গণবিক্ষোভে পরিণত হয়।
সরকারের দাবি আদালতের নির্দেশে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে জেনেও পড়ুয়াদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে জামাত ইসলামি, বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন নাশকতা ছড়ায়। জামাতকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত জুলাই থেকে যে রক্তাক্ত আন্দোলন ছড়িয়েছে চলতি আগস্টে সেটি আরও বড় আকার নিল। ঢাকার সংবাদ মাধ্যমগুলিতে বলা হয়েছে, আন্দোলন দমনে সরকারের ভূমিকা ভয়াবহ ও নির্বিচারে গুলি করে খুনের অভিযোগে পড়ুয়াদের অভিভাবক ও জনতা সামিল।