‘বুলডোজার বাবা’ যোগীর প্রশাসন আবারও স্বমহিমায় (Uttar Pradesh)। এবার নেতার বেকারিও ছাড় পেল না বুলডোজারের ধাক্কা থেকে। তবে এই নেতাও কিন্তু ধোয়া তুলসীপাতা নন। ধর্ষণের মত মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এর আগে বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদাহরণ দেখা গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) সরকারের এই বুলডোজার নীতি সারাদেশে কমবেশি প্রশংসিতও হয়েছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) বিরোধীদল সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে যোগীর এই বুলডোজার রাজনীতি নিয়ে।
এবার তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই সমাজবাদী পার্টির নেতাই বুলডোজারের ধাক্কায় বেসামাল। সরাসরি ধাক্কা না হলেও সাধের বেকারি গুঁড়িয়ে যাওয়াতে রীতিমতো বেকায়দায় সমাজবাদী পার্টির এই নেতা। কিন্তু তা নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করতে পারছে না সমাজবাদী পার্টি। কারণ যে নেতার বেকারি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি নিজেই একটি গণধর্ষণের মামলার প্রধান অভিযুক্ত।
বিজেপিকে শূন্য করতে নতুন কৌশল তৃণমূল কংগ্রেসের
সম্প্রতি অযোধ্যায় একজন ১২ বছর বয়সী নাবালিকাকে ধর্ষণের মতো অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে মোঈদ খানের নাম। যিনি কিনা উত্তর প্রদেশের ভদ্রসা এলাকার সমাজবাদী পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা। ভদ্রসা এলাকাতেই অভিযুক্ত মঈদের একটি বড় বেকারির কারখানা ছিল। সেই কারখানায় একেবারে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় যোগীর প্রশাসন। সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনীও।
সকাল থেকেই বেকারী এবং সংলগ্ন এলাকা ঘিরে ফেলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশাল সংখ্যক বাহিনী। গত ৩০ শে জুনই অযোধ্যার ধর্ষণ মামলাতে মঈদ এবং তার কারখানার কর্মচারী রাজু খানকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
তাদের বিরুদ্ধে উঠেছিল ধর্ষণ এবং ব্ল্যাকমেলিংয়ের মারাত্মক অভিযোগ। অভিযোগ যে ১২ বছর বয়সী নাবালিকাকে এই দুই অভিযুক্ত মিলে গত দু-আড়াই মাস ধরে শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করেছে। শুধু তাতেই থেমে থাকেনি অভিযুক্তরা। রীতিমতো সেই সমস্ত অত্যাচারের ভিডিও তুলে ব্ল্যাকমেল করতেও শুরু করে তারা।অভিযোগ যে ভিডিও লিক করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন চলেছে শারীরিক নির্যাতন।
অযোধ্যার এসএসপি রাজ করণ নাইয়ার জানিয়েছেন, যে প্রথমে লোক লজ্জার ভয়ে কিশোরী চুপ করেই ছিল। কিন্তু পরে গর্ভবতী হয়ে পড়ায় শারীরিক পরীক্ষার সময় গোটা ব্যাপারটা জানা যায়। তারপরই কিশোরীর পরিবার দ্বারস্থ হয় অযোধ্যার পুলিশের।
BJP: নীতীশ-নাইডুকে নিয়ে অস্বস্তি রয়েইছে, এবার মোদী-শাহদের নয়া চিন্তা শরিক আটওয়াল
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন। নির্যাতিতার মাকে তিনি সমস্ত রকম প্রশাসনিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। ক্ষিপ্ত যোগী সেদিন জনসমক্ষেই ঘোষণা করেছিলেন অভিযুক্তদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি নিজের এক্স হান্ডেলেও গোটা ঘটনার দিয়ে তিনি অভিযুক্তদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
আর তারপর পরপরই গ্রেফতারি এবং বুলডোজার নামল ময়দানে। যদিও অযোধ্যায় একাধিক রাস্তা এবং পরিকাঠামোগত সংস্কারের জন্য বুলডোজার নীতি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে অযোধ্যা সংলগ্ন এলাকাতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে কমবেশি ক্ষোভও ছিল। রাজনীতিবিদদের মতে যার প্রতিফলন ঘটেছে গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে।
এমনকী উত্তর প্রদেশ বিজেপির অভ্যন্তরেও যোগীর বুলডোজার নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু এবার খোদ ধর্ষকের বেকারি গুঁড়িয়ে দেওয়াতে কার্যত নায়কের আসনে যোগী। সমাজবাদী পার্টিও তাদের এই অভিযুক্ত নেতার পক্ষে কোনওভবেই মুখ খুলতে পারছে না। যোগী প্রশাসনের আধিকারিকরা যা দেখে কার্যত মুখ টিপে হাসছেন।