দু’সপ্তাহের কিছু বেশি সময় পর ফের মাথাচাড়া দিল উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ বিতর্ক। সোমবার বরাহনগর ও ভগবানগোলার দুই বিধায়ক যথাক্রমে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকারকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল। সিভি আনন্দ বোসের সাফ দাবি, তাঁর নির্দেশ মোতাবেক ডেপুটি স্পিকারের কাছে শপথ না নেওয়ায় ওই সায়ন্তিকা ও রেয়াতের শপথগ্রহণ ‘অসাংবিধানিক’। ওই চিঠিতেই শাসক দলের দুই বিধায়ককে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
শপথ নেওয়ার পর এ দিনই পূর্ণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল বরানগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার রেয়াত হোসেন সরকারের। কিন্তু তার আগেই তাঁদের কাছে পৌঁছায় রাজ্যপালের চিঠি।
জানা গিয়েছে ওই চিঠিতে রাজ্যপালের তরফে লেখা হয়েছে, সাংবিধানিক প্রধান শপথ নিয়ে নির্দিষ্ট করে কাউতে দায়িত্ব দেওয়ার পর স্পিকারের আইনত এক্তিয়ার নেই নির্বাচিত প্রার্থীদের শপথ নেওয়ানোর। সঠিক পদ্ধতিতে শপথ না নিয়ে কেউ অধিবেশনে যোগ দিলে তাঁকে কোন কোন সমস্যায় পড়তে হতে পারে, তারও তালিকা দিয়েছেন রাজ্যপাল। বলা হয়েছে, সঠিকভাবে শপথ ছাড়া কেউ বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন না। ভোটাভুটি, প্রশ্নোত্তর পর্বে যোগ দিতেও পারবেন না। আর তা দিলে হবে বেআইনি কাজ। এক্ষেত্রে জরিমানা হয় আইনভঙ্গকারীদের। আনন্দ বোসের দাবি, এক্ষেত্রে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে জরিমানার কথা বলা আছে সংবিধানে। এমনকী সুপ্রিম কোর্টেরও এই নিয়ে কী নিয়মবিধি রয়েছে।
বাতিল এই ট্রেনের টিকিটের পুরো টাকা ফেরত পাবেন যাত্রীরা! এইসব শর্ত মানলেই কেল্লাফতে
ওই চিঠির কথা স্পিকারকে জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকার।
দুই বিধায়কের শপথ ঘিরে রাজ্যপাল-বিধানসভা তরজা তুঙ্গে উঠেছিল। সায়ন্তিকারা রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে রাজভবনে গিয়ে শপথবাক্য পড়তে রাজি না হওয়ায় জটিলতা বাড়ে। বহু চিঠি চালাচালি, টালবাহানার পর রাজ্যপাল দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু স্পিকারের উপস্থিতিতে সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশীস বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষে বিধানসভার বিশেষ অধিবেষন ডেকে স্পিকার সায়ন্তিকা ও রেয়াত-কে শপথবাক্য পাঠ করান।
সেই সময় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যেহেতু বিধানসভার অধিবেশন চালু ছিল, তাই রাজ্যপালের চিঠি মান্যতা পেতে পায়নি। রুলস অফ বিজনেসের ২ নম্বর অধ্যায়ের ৫ নম্বর ধারা মেনে তিনিই তাঁদে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন।
তবে, বাজেট অধিবেশনের মাঝে সোমবার সেই শপথ বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিল।