অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের (Bangladesh) আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে ভারতেও। বলা যেতে পারে ভারতবর্ষের সাথে এখন অবধি একমাত্র বাংলাদেশই (Bangladesh) এমন পড়শীদেশ যার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই পড়শী দেশেও বিদ্রোহের দাবানল। চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশে (Bangladesh) ভারতীয়রা কেমন আছেন? ভারতবর্ষে তাঁদের পরিবার পরিজনেরা এই নিয়ে রীতিমতন উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। আর এই পরিস্থিতি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের ঘোষণা তাঁদেরকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল আজ বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে। সেখানে তিনি আপাতত বাংলাদেশ বসবাসকারী ভারতীয়দের পরিবারকে আশ্বস্তই করেছেন। জয়সওয়াল জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয়রা আপাতত নিরাপদেই আছে। তাঁদের আপাতত দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
মেধার ভিত্তিতে চাকরির দাবি নিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী। এই অবস্থায় বাংলাদেশে বসবাসকারী এবং পড়াশোনা করছে এমন ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য দুশ্চিন্তা ক্রমশই বাড়ছে ভারতে বসবাসকারী তাদের পরিবারদের। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যে প্রায় আট হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই মেডিক্যাল স্টুডেন্ট। তবে গণবিক্ষোভের পরিস্থিতিতেও তারা নিরাপদেই রয়েছেন বলেই দাবি বিদেশ মন্ত্রকের।
অনলাইন গেমই এখন সরকারের সোনার ডিম দেওয়া হাঁস! নতুন বাজেটে বড়ো ঘোষণা?
ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশের মোট ভারতীয়ের সংখ্যা বেশি প্রায় ১৫ হাজারের কাছাকাছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের কেউই কোনও বিপদের মধ্যে নেই এমনটাই বলছেন বিদেশ মন্ত্রক। তবে বাংলাদেশের ভারতীয়দের জন্য বিশেষ কিছু নির্দেশিকাও জারি করেছে বিদেশ মন্ত্রক।
সেই নির্দেশিকায় পরিষ্কার করে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী এবং ভারতীয় অভিবাসীরা যেন যতটা সম্ভব কম বাইরে বের হন। যদি কোনও জরুরী বা আপৎকালীন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে যেন নিকটবর্তী ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসে যোগাযোগ করেন তাঁরা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা এবং সিলেটের ভারতীয় দূতাবাসের যোগাযোগের নাম্বারও বিদেশ মন্ত্রক দিয়ে দিয়েছেন এই নির্দেশিকায়।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে চাকরির কোটা নিয়ে বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। একাধিক সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের উপরে আক্রমণ, ধর্মঘটের মতো ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই বিচ্ছিন্ন। এমনকি সরকারি নির্দেশে বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বিক্ষোভের তীব্রতা এবং হিংস্রতা আরও বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পক্ষের আলোচনার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।
আল্লাহু আকবর, পুলিশের গুলি ও রামদা ভিডিও দেখে শিউরে উঠছি: তসলিমা নাসরিন
তবে বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে কোনওরকম কোনো মন্তব্য করতে চায়নি বিদেশ মন্ত্রক। গোটা বিষয়টিকে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছেন তাঁরা। তবে বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সাথে তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের। বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর নিজে গোটা বিষয়টির উপরে নজর রাখছেন বলেও ততাঁরা জানিয়েছেন। যদি পরিস্থিতি আরও জটিল হয়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ভারত পিছপা হবে না এমনটাও অভাস দিয়েছেন মুখপাত্র রনদীপ জয়সওয়াল।