কলকাতাঃ উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। প্রবল বর্ষণে প্লাবিত কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের কিছু অংশ। বিগত এক সপ্তাহের ওপর টানা বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উত্তরের জেলাগুলিতে।
সিকিমে তিস্তা ফুলে ফেঁপে ওঠায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। ফলে প্রবল বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় দার্জিলিং, কালিম্পঙের মতো জেলাগুলিকে। ভয়ানক ধসে ১০ নং জাতীয় সড়ক ভেঙে পড়ায় পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের একাধিক জেলার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তবে কোথাও কোথাও ধীরগতিতে কিছু যানবাহনের চলাচল করছে।
চোপড়াকাণ্ডে নয়া মোড়, জেসিবির বদলে নির্যাতিতার এফআইআর সেলিম-মালব্যর বিরুদ্ধে!
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলা নদী মাতৃক দেশ। আর এখানে অতিরিক্ত ঝড় বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় তাতে উত্তরবঙ্গ বন্যায় ভাসছে। বর্ষাকালে কালিম্পঙে ধস নামে চিরকাল। গরমে শুকনো থাকে। এটা প্রকৃতির নিয়ম। জেলা প্রশাসনের থেকে খবর পেয়েছি, বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।” বন্যা পরিস্থিতি নজরদারিতে এবার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করবে রাজ্য সরকার।
এছাড়াও ক্ষয়প্রবণ এলাকায় ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে বন্যায় আর্থিক সাহায্য না মেলায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি ঘর নির্মাণ করা হবে। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দেয়নি কেন্দ্র।”
এরমধ্যে মোদী সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের নদীর জলবন্টন চুক্তিটিকেও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে জলবন্টনের বিষয়ে নিয়েও কেন্দ্রকে একহাত নেন তিনি। গঙ্গা নদীতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”দীর্ঘদিন ধরে ফারাক্কা নদীতে ড্রেনেজ হয়নি। ড্রেনেজের জন্য অর্থ সহায়তাও করেনি কেন্দ্রীয় সরকার।বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তিতে রাজ্যের সম্মতি নেয়নি। আত্রেয়ী নদীতে বাঁধ দিয়েছে বাংলাদেশ। যার ফলে দক্ষিণ দিনাজপুরে সেচ ও কৃষির সমস্যা হচ্ছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে জানিয়ে লাভ হয়নি।”
ঋতুমতি মহিলাদের মাসিক ছুটি, আর্জি খারিজ করে শঙ্কার কথা শোনাল সুপ্রিম কোর্ট
জলপাইগুড়ি জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “করলা নদীর ওপর ভাঙন রোধ করা হয়েছিল ২০ কোটি টাকা। ভুটানের নদীর জলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় উত্তরর জেলাগুলিতে। রাস্তায় ধস নেমে ভাঙনের বিষয়ে নজর রাখতে হবে। সেনাবাহিনীকে নজর রাখতে হবে। জলপাইগুড়ি সদর ও মাল মহকুমা বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সন্দেশখালি মামলা: ফের মুখ পুড়ল মমতা সরকারের! সুপ্রিম কোর্টে খারিজ সিবিআই তদন্তের চ্যালেঞ্জ
জলপাইগুড়ির পুরসভা ও জেলা প্রশাসনকে গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জলপাইগুড়িতে ৯ টি ফ্লাড সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। ডিজাস্টার রিলিফ প্যাকেজ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি কোচবিহারে তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙ্গা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ। এখানে ১২ টা ফ্লাড সেন্টার খোলা হয়েছে। কোচবিহারে তোর্সা নদীর জলে বলরামপুরের শোলাডাঙা গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কয়েকশো বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। গ্রামের রাস্তা জলে ডুবে গিয়েছে। বৃষ্টির জলে কোচবিহার শহরের কয়েকটি রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে।