কল্যাণের ‘বকা’ খেয়ে পালিয়ে যাওয়া কাঞ্চন এখনও ভয়েই যাচ্ছেন না উত্তরপাড়ায়?

গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলায়, উত্তরপাড়ার বিধায়ক (Uttarpara Kanchan Mullick) কী একেবারে উত্তরপাড়া থেকেই সরে গেলেন? নাকি সংসারের মোহতে তিনি এতটাই মশগুল যে নিজের বিধায়ক…

Kanchan Mullick কল্যাণের 'বকা' খেয়ে পালিয়ে যাওয়া কাঞ্চন এখনও ভয়েই যাচ্ছেন না উত্তরপাড়ায়?

গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলায়, উত্তরপাড়ার বিধায়ক (Uttarpara Kanchan Mullick) কী একেবারে উত্তরপাড়া থেকেই সরে গেলেন? নাকি সংসারের মোহতে তিনি এতটাই মশগুল যে নিজের বিধায়ক সত্ত্বাকে ভুলেই গিয়েছেন? এখন এইসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন উত্তরপাড়া বিধানসভা (Uttarpara Kanchan Mullick) এলাকার তৃণমূলের কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে এলাকার জনগণ। উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়া বাস্তবের মাটিতে তারা কবে আবার দেখতে পাবেন, সেই নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

লোকসভা ভোটের প্রচারের একটা স্মৃতি এখনো অনেকের মনে বেশ ভালো মতোই টাটকা। শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার করছেন জমিয়ে। উপস্থিত ছিলেন তারকা প্রচারক কাঞ্চন মল্লিকও। কিন্তু কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মানেই মুখের উপরে সোজাসাপ্টা কথা বলে দেওয়া। এই ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছিল। কাঞ্চনের উপরে ক্ষুব্ধ কল্যাণ তাঁকে নিজের হুড খোলা জীপ থেকে নামিয়ে দেন। সেসময় কল্যাণবাবু নাকি পরিষ্কার এটাও বলেন, কাঞ্চন মল্লিক তাঁর প্রচারে থাকলে উল্টে তাঁকে হারতে হবে।

   

স্থানীয় নেতৃত্বের অনেকের মতেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পারিবারিক জীবন, বিশেষত বিয়ে নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের মধ্যে ছিলেন কাঞ্চন। নিজের প্রচারে, বিশেষ করে শ্রীরামপুরের মহিলা ভোটারদের কাছে যাতে কোনরকম ভাবে নেতিবাচক বার্তা না পৌঁছয় তাই কাঞ্চনকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন কল্যাণ। কিন্তু কোন্নগরের নবগ্রামের প্রচারে ঘটা সেই ঘটনার পর থেকেই কাঞ্চন যেন আরও উবে গিয়েছেন উত্তরপাড়া থেকে।

জিও হাতছাড়া হতে পারে আম্বানিদের? মোদীর নতুন আইনে শঙ্কায় নেটওয়ার্ক কোম্পানিরা

যদিও সে সময় যখন সংবাদ মাধ্যমে এই নিয়ে কাঞ্চন মল্লিককে প্রশ্ন করেছিল, কাঞ্চন তার ক্ষোভ লুকিয়ে রাখতে পারেননি। রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্বরে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছিলেন। লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অফিস করবেন কিনা সেই প্রশ্ন তুলে কটাক্ষ করেছিলেন কল্যানকে। কল্যান অবশ্য কাঞ্চনের ক্ষোভকে খুব একটা আমল দেননি। এমনকী লোকসভা ভোটে জেতার পরে উত্তরপাড়ার বিভিন্ন জায়গাতে যে বিজয় মিছিল বা সংবর্ধনা সভা হয়েছে, তাতেও দেখা মেনে নিয়ে এই সেলিব্রেটি বিধায়কের।

তবে বিতর্কের মুখে যে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা হচ্ছে না তাও নয়। কিন্তু সেটা কাঞ্চন মল্লিকের পক্ষ থেকে নয়, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের তরফ থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। উত্তরপাড়া শহর তৃণমূল সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বক্তব্য -”মাখলায় আমাদের ক্লাবের অফিসেই বিধায়ক বসেন। তিনি জানিয়েছেন, মুম্বইয়ে একটি শ্যুটিংয়ের কাজে এক মাস ব্যস্ত থাকায় এলাকায় আসতে পারছেন না। তবে তাঁর আপ্ত-সহায়ককে তিনি অফিসে পাঠান। আয় সংক্রান্ত শংসাপত্র, বাসস্থানের শংসাপত্র-সহ কিছু নথি জরুরি ভিত্তিতে মানুষের প্রয়োজন হয়। সেই সব আমরা বিধায়কের আগাম সই করিয়ে রাখায় এলাকার মানুষজনের কাজকর্ম কোনও ভাবে চলে যাচ্ছে।”

চন্দ্রগ্রহণে অন্ধ্রপ্রদেশ? সরকারে আসার পরই চার খবরের চ্যানেল বেমালুম ভ্যানিশ!

কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, একমাস ধরে শুটিং করছেন, সেটা ভালো কথা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় কাঞ্চন-শ্রীময়ীর ভিডিও থেকে শুরু করে রিলসের তো কোন কমতি নেই। নতুন বিয়ে করা বউকে এত সময় দিতে পারছেন কাঞ্চন, অথচ ২১ সালে যাদের দরজায় ঘুরে ভোট ভিক্ষা করেছিলেন, তাদের জন্য কোনও সময় নেই? অনেক স্থানীয় নেতৃত্বের মতে, ২০২৬ শে যে আর টিকিট তিনি পাচ্ছেন না, সেটা এক প্রকার পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তাই উত্তর পাড়া থেকে মন উঠে যাওয়া কাঞ্চন এখন শ্রীময়ী-প্রেমে মগ্ন থাকতেই বেশি পছন্দ করছেন।