নিট দুর্নীতিতে (NEET Paper Leak) তোলপাড় গোটা দেশ। বিরোধী দলগুলি এই ঘটনায় মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছে। যদিও অভিযোগ মানতে চায়নি গেরুয়া শিবির। এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয় কুমার সিনহা। তাঁর দাবি, প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে বিহারের আরজেডি নেতা তথা ইন্ডি জোটের অন্যতম মুখ তেজস্বী যাদবের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী জড়িত।
বিজয়ের দাবি, নিট প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সিকান্দার ইয়াদভেন্দু প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের ব্যক্তিগত সচিব প্রীতম কুমারের নিকটাত্মীয়। বিহার পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ ইউনিটের তদন্তে দানাপুরের পুর-কমিটির জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র সিকান্দার ইয়াদভেন্দুকে নিট প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলার কিংপিন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, সিকান্দার ইয়াদভেন্দু তেজস্বী যাদবের ব্যক্তিগত সচিব প্রীতম কুমারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। ৪ মে সিকান্দারের বোন রিনা যাদব এবং ছেলে অনুরাগ যাদবের থাকার জন্য একটি এনএইচএআই-এর গেস্ট হাউস বুক করা হয়েছিল। গেস্ট হাউসের ডায়েরিতে একটি ফোন নম্বর এবং ‘মন্ত্রী জি’ উল্লেখ করা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থা এই মন্ত্রীজির পরিচয় জানার চেষ্টা করছে।
কৃষকদের দেড়গুণ বেশি আয়ের সুযোগ, ১৪ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি কেন্দ্রের
তিনি বলেন, তেজস্বী যাদবের নির্দেশে কোন অফিসার বা কর্মচারী কাজ করছেন, তা খুঁজে বের করার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আরজেডির গোটা ব্যবস্থাটাই অপরাধ ও দুর্নীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
গত ৫ মে, রবিবার নিট ইউজি পরীক্ষা হয়। ওই দিনই পটনার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে প্রশ্নের ফোটোকপি বিলি করার অভিযোগ পায় পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, নিট কেলেঙ্কারির জাল ছড়িয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাত, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক-সহ একাধিক রাজ্যে।
২০১৩ সাল থেকে নিট পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বভারতীয় স্তরে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি শুরু হয়েছে। তার আগে রাজ্যের বোর্ডগুলি পৃথকভাবে মেডিক্যালে প্রবেশিকা পরীক্ষা নিত। সেই পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতেন। কিন্তু ২০১৪-২০১৫ সালেও এই ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হয়নি, কারণ বিভিন্ন বোর্ডের আপত্তি ছিল।
মোদীর মন্ত্রীর নাকানিচোবানি, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ লিখতে গিয়ে এ কী লিখলেন!
২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্থির হয়, সর্বভারতীয় ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তবে ২০১৬ সাল থেকে নিট পরীক্ষা কেন্দ্রীয় ভাবে হলেও এই ‘দুর্নীতি’র কথা এবারই প্রথম প্রকাশ্যে আসে।
সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা (২০২৪) বাতিলের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারীরা অভিযোগ করেন যে, এবার নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য অনিয়মও হয়েছে। ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) এবং কেন্দ্রের কাছ থেকে নিট-ইউজি, ২০২৪-এ প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে জবাব তলব করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
নিট কেলেঙ্কারিতে এবার বিহারের মাফিয়া যোগ! ১৩ গ্রেফতারিতে বাতিল গোটা পরীক্ষাই?