লোকসভা ভোট মিটতেই বাংলায় বিধানসভা উপনির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। সোমবার মানিকতলা (Maniktala Bye Election) সহ রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ১০ জুলাই মানিকতলা, বাগদা, রায়গঞ্জ এবং রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে নির্বাচন। ২১ জুন এই চার কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
এর মধ্যে সকলের নজর কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মানিকতলা বিধানসভার দিকে। কারণ এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কড়া টক্কর দিয়েছেন বিজেপির তাপস রায়। জোড়াসাঁকো ও শ্যামপুকুর বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তাপস।
উপনির্বাচন ঘোষণা হতেই মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও এ নিয়ে বিজেপির তরফে এখনও তেমন কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। সূত্রের খবর, এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন তাপস রায়। দৌড়ে রয়েছেন উত্তর কলকাতার প্রভাবশালী এক কাউন্সিলরও।
মোদীদের চিন্তা বাড়িয়ে স্পিকার পদ ছিনিয়ে নিতে মরিয়া নীতীশ-চন্দ্রবাবু! কেন এত মোহ?
প্রার্থীর বিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ বঙ্গ বিজেপি। সূত্রের খবর, ৪ কেন্দ্রে প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে দিল্লি থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। এদিকে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়েও জল্পনার শেষ নেই। একটি সূত্রের দাবি, প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাধন-কন্যা শ্বেতা পান্ডে।
তবে এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ শ্বেতা। তাঁর কথায়, এটা আমি বলতে পারব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন। এর আগে শ্বেতাকে এই কেন্দ্রের আহ্বায়ক করা হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাবা সাধন পাণ্ডে মারা যাওয়ার পর থেকেই এলাকায় প্রভাব বাড়াতে থাকেন শ্বেতা। নিয়ম করে বিভিন্ন জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন তিনি।
হাফ ছেড়ে বাঁচার তাগিদ! রেকর্ড গড়ে মন্ত্রিত্ব পেয়েও ছাড়ার আর্জি মোদীর প্রিয়পাত্রের
তৃণমূলের সভাতেও দেখা যায় সাধন-কন্যাকে। ফলে এই কেন্দ্রে শ্বেতাকে তৃণমূলের প্রার্থী করার সম্ভাবনা বেশি। তৃণমূলের প্রাক্তন এক মুখপাত্রও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। এক আমলার নাম নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা চলছে বলে খবর। একুশের নির্বাচনে মানিকতলা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন সাধন পাণ্ডে। ২০ হাজার ২৩৮ ভোটে বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে হারান তিনি। ২০২২-র ফেব্রুয়ারিতে মৃত্যু হয় সাধন পাণ্ডের।
তারপর থেকে এই কেন্দ্রটি বিধায়কহীন হয়ে পড়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচনের বিধান থাকলেও, মানিকতলা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে তা হয়নি। গণনায় কারচুপির অভিযোগে ফলাফল বাতিলের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। সেই মামলার সম্প্রতি নিষ্পত্তি ঘটেছে। আদালত উপনির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে।
ছেলে মন্ত্রী, মোটেও খুশি হয়নি সুকান্ত’র মা! ঝরে পড়ল আক্ষেপ
একটা সময় বামেদের দুর্গ ছিল মানিকতলা। সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী এই কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। ২০১১ সাল থেকে টানা তিনবার মানিকতলার বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন সাধন পাণ্ডে। ২০২১-এ মানিকতলা কেন্দ্রে জয়ী হন সাধন পাণ্ডে। তিনি ৬৭ হাজার ৫৭৭ ভোট পেয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কল্যাণ চৌবে পেয়েছিলেন ৪৭ হাজার ৩৩৯টি ভোট।