আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ ঘড়ির কাঁটা প্রায় আড়াইটে ছুঁইছুঁই। এখনও পর্যন্ত ভোটের ফলাফলের যা হালহকিকত তাতে এইটুকু বোঝা যাচ্ছে যে রাজ্যে ফের উড়তে চলেছে সবুজ ঝড়। পরিসংখ্যার নিরিখে বলা যাচ্ছে যে প্রায় ৩০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। আর অন্যদিকে প্রায় ১১টি আসনে এগিয়ে আছে বিজেপি। আর ১টি মাত্র আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস সেটাও আবার মাঝেমধ্যে শূন্য হয়ে যাচ্ছে। বামদের কথা যত না বলা যায় ততই ভাল। কিন্তু ভোটের বাজারে একটা ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল ইডি, সিবিআই, এনআইএ! ভোটের আগে তৃণমূল নেতাদের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল তাঁরা। দু’একজন রাঘববোয়ালকে পাকড়াও করেছিল। সেই নিয়ে ভোটের বাজারে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু লাভের লাভ কী হল? সেই তো তৃণমূলেই আস্থা রাখল বাংলা।
ভোটের বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে রেশন দুর্নীতিতে জেলের ভিতরে গিয়েছেন বালু। এছাড়াও বেশ কিছু হোয়াট কলার পরিহিত তৃণমূলের বিধায়ক এবং দাপুটে নেতা। রাজ্যে প্রায় হেড অফিস খুলে ফেলার দায় পড়েছিল ইডি, সিবিআই-এর। রাতদিন এক করে কাজ করেও কাজে এল না তাঁদের খাটনি। উল্টে এটাই কাল হল বঙ্গ বিজেপি। এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা কি ডোবাল বিজেপিকে ?
অন্যদিকে এত দুর্নীতি, সঙ্গে জুড়েছিল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। সেই সন্দেশখালিতে নেমেছিল এনএসজিও। তোলপাড় হয়েছিল রাজ্যরাজনীতি। তবুও ঘাসফুলের কিছুই এসে গেল না। রেশন, শিক্ষক, পৌরসভা সবকিছুতেই দুর্নীতি সামনে এসেছিল। নাম জড়িয়েছিল ঘাসফুলের প্রথম সারির নেতার। তবুও বাংলার মানুষ ভরসা রাখল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে। প্রশ্ন উঠেছে এতদিন ধরে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন কি তবে জলে গেল? একটা বিস্তর শিক্ষকদের ভোটও কি ঘাসফুলের ঘরেই ঢুকল?
এই মুহূর্তে সারা ভারতে এনডিএ জোট ২৯৭ আসনে এগিয়ে রয়েছে অন্যদিকে ২২৮ আসনে এগিয়ে ইন্ডিয়া জোট। তবে ভোট শতাংশের হিসেব কষলে দেখা যাবে এই মুহূর্তে ঘাসফুলের ভাগ্যে জুটেছে ৪৬ শতাংশের বেশী ভোট আবার অন্যদিকে বিজেপি পেয়েছে ৩৮ শতাংশের কিছু বেশী ভোট। আবার বাম সব মিলিয়ে মাত্র ৬ শতাংশ ভোট। সেই নিরিখে বলা যেতেই পারে বাংলার মানুষ কিন্তু সবশেষে মমতা-অভিষেকেই ভরসা রাখল। অমিত-মোদী শাহদের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি বৃথা গেল।