Partha Bhowmik Exclusive: ‘বিজেপির টিকিট পাওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা বিভিন্ন রায় দিচ্ছে’: পার্থ ভৌমিক

আদিত্য ঘোষ, ব্যারাকপুরঃ তিনি তো নৈহাটির জনগণের কাছে ‘গুড বয়’ বলে পরিচিত। শিল্পসংস্কৃতির লোক বলে সমাদৃত। তার মধ্যে আজ ২৫ বৈশাখ, তিনি এইদিন সকাল থেকেই…

short-samachar

আদিত্য ঘোষ, ব্যারাকপুরঃ তিনি তো নৈহাটির জনগণের কাছে ‘গুড বয়’ বলে পরিচিত। শিল্পসংস্কৃতির লোক বলে সমাদৃত। তার মধ্যে আজ ২৫ বৈশাখ, তিনি এইদিন সকাল থেকেই তুমুল ব্যস্ত। সকালবেলা পাঞ্জাবি পায়জামা পরে গান গেয়ে একপ্রস্থ প্রচার সেরেছেন। আরও বহু প্রস্থ প্রচার বাকি। কারণ হাতে গুনে আর কয়েকটা দিন, তারপরেই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। তাই তুমুল ব্যস্ত তৃণমূলের প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। তাঁকে যখন ফোনে পাওয়া গেল, মনে হলো এই দুপুরে একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন। প্রথমেই জিজ্ঞাসা করলাম,  ‘‘ এত সহজে মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিল্লি যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলেন?” তিনি একটু ভেবে বললেন,  ‘‘ দল যা বলবে, সেটাই শেষ কথা। আমি দলের কথা শুনতে বাধ্য। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।” তাঁকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘‘ দলের কথায় শিরোধার্য তাহলে ?” তিনি একটু গম্ভীর গলায় উত্তর দিলেন,  ‘‘ হ্যাঁ। দল বলেছিল বিধায়ক হতে, হয়েছি। জনগণের জন্য কাজ করেছি। এবার বলেছে সাংসদ হয়ে আরও বড় দায়িত্ব পালন করতে, তাই সেই কাজ করার জন্য এগিয়ে এসেছি।”

   

আবারও জিজ্ঞাসা করলাম,  ‘‘ ২০১৯ সালে ৩০ মে নৈহাটিতে তৃণমূল হেরে যাওয়ার পরে সভা করেছিলেন। আপনার চোখে জল ছিল। আপনি বলেছিলেন বিজেপির এই সন্ত্রাস একদিন বন্ধ করবেন! সেই একদিন কি এসে গিয়েছে?” তিনি আবারও একটু গম্ভীর হয়ে বললেন,  ‘‘নিশ্চয় পারব। মানুষ এর বিরুদ্ধে জবাব দেবে। ব্যারাকপুরের মানুষ আমার সঙ্গে আছে।” পাল্টা প্রশ্ন করলাম,  ‘‘ আপনি কি জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ?” তিনি হাসতে হাসতে বললেন,  ‘‘নিশ্চয়। এটা আমার জয় নয়, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়। উনিই জিতবেন। ওনাকে জনগণ জেতাবেন।”  ‘‘ যদি জিতে দিল্লি যান, তাহলে আপনার প্রথম কাজ কি হবে?” জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি একটু ভেবে বললেন,  ‘‘ এডুকেশানাল হাব তৈরি করব। চাকরি তো দিতে পারব না। অন্তত চাকরি পাওয়ার জন্য ছেলেমেয়েদের তৈরি করব।” তাঁকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,  ‘‘ এসএসসি কাণ্ডে তো রাজ্যরাজনীতি এখন আলোড়িত। সুপ্রিম কোর্ট ওই নির্দেশকে আপাতভাবে স্থগিত করেছে। কী বলবেন ? ‘‘ তিনি একটু চনমনে মেজাজে বললেন,  ‘‘এবার জনগণ বুঝতে পারছে কলকাতা হাইকোর্টের কিছু বিচারপতি কোনও নির্দিষ্ট দলে গিয়ে টিকিট পাওয়ার জন্য অনেক কিছুই করে।” একটু থেমে তিনি নিজেই বললেন,  ‘‘ বিজেপির টিকিট পাওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা বিভিন্ন রায় দিচ্ছে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখুন। এগুলো সাধারণ মানুষ দেখছে কিন্তু। তবে বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে। সবাই কিন্তু ওনার মতো নয়।”

জিজ্ঞাসা করলাম,  ‘‘শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন আপনার নাকি সন্দেশখালিতে জমি আছে ?” তিনি একটু গম্ভীর গলায় উত্তর দিলেন, ‘‘ মানহানির মামলা করেছিলাম। তারপর থেকেই তো উনি চুপ।” পাল্টা প্রশ্ন করলাম, ‘‘ নিন্দুকেরা বলে আপনি নাকি নাটকের লোকদের ভোটের কাজে ব্যবহার করেন।” তিনি একটু রেগে বললেন, ” একটা ছেলেকে দেখাতে পারবেন ? আমি কাউকে জোর করে মিছিলে হাঁটিয়েছি।” একটু থেমে তিনি নিজেই বললেন,  ‘‘ আমি নাটকের লোক। নাটকের লোকেদের কথা ভাবি। আমি জয়ী হলে সারা ব্যারাকপুরের বিভিন্ন নাট্যমঞ্চে ফ্রীতে ২৪ দিন নাট্যউৎসব হবে। যেমন নৈহাটি ঐকতান মঞ্চেও হয়।” জিজ্ঞাসা করলাম,  ‘‘ ব্যারাকপুর সন্ত্রাসমুক্ত করে তুলতে পারবেন?” তিনি জানালেন,  ‘‘নিশ্চয় পারব। জনগণ আমার সঙ্গে আছেন।” প্রশ্ন করলাম,  ‘‘ আজ সকালে যে মাঠে প্রধানমন্ত্রী সভা করতে আসবেন সেই মাঠেই ট্র্যাক্টর চালানো প্রসঙ্গে অর্জুন সিং আপনাকে দায়ী করেছে।” হাসতে হাসতে তিনি বললেন,  ‘‘ একমাস ধরে ওখানে কাজ চলছে। আসলে অর্জুন বাবুর মাথাটা খারাপ হয়ে গিয়েছে।”  সবশেষে জিজ্ঞাসা করলাম, ” বিপক্ষে অর্জুন সিং বলে কি চাপে আছেন ?” তিনি বললেন, ” আমি একদম চাপমুক্ত। আমিই জিতব।”