ভোটের পরেই বিজয় মিছিল। উত্তরবঙ্গের (North Bengal) তিন কেন্দ্রেই ভোটের পরে মিছিল তৃণমূলের। কোচবিহারে বাজি ফাটিয়ে মিষ্টিমুখ বিজেপিরও। এ সব কি পরের দফার ভোটগুলিতে চাপ বাড়ানোর কৌশল? এই বিজয় মিছিল বুমেরাং হবে না তো? প্রশ্ন নানা মহলে।
শুক্রবার প্রথম দফায় ভোট হয় উত্তরবঙ্গের তিন লোকসভা কেন্দ্র- আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে। সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ। ভোট মিটতেই বেনজির ছবি বাংলায়। জয়ের উদযাপন শুরু। কোথাও বিজয় মিছিল। কোথাও বাজি ফাটিয়ে মিষ্টি মুখ। বিজয় মিছিল করে তৃণমূল, তিন কেন্দ্রেই। আর কোচবিহারে মিষ্টি বিলি করে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। ভোটের দিন এই কেন্দ্রে সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল। সবথেকে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এখানকার বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।
ভোটের পরেই বিজয় মিছিল ঘিরে উঠছে নানা প্রশ্ন। অনেকেরই মনে আসছে পুরনো ইতিহাস। ২০১৯ সালের ভোটের পরেই বিজয় মিছিল দেখেছিল ব্যারাকপুর। ভাটপাড়ায় বিজয় মিছিল করেন বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিং। প্রায় তিন সপ্তাহ পরে ফল ঘোষণার পর দেখা যায় তিনিই জয়ী। ২ বারের তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়েছেন অর্জুন সিং। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে দীনেশের ভোট্র সেনাপতি ছিলেন অর্জুন। দলবদল করে তাঁকেই ঘায়েল করেন পদ্মপ্রার্থী অর্জুন। সেই ঘটনার বছর দুই পর বিজেপিতে যোগ দেন দীনেশ ত্রিবেদী। তবে এবার ব্যারাকপুরে অর্জুনকেই প্রার্থী করেছে বিজেপি।
ফল ঘোষণার আগে বিজয় মিছিল বমেরাং হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বাংলার মাটি সেই ঘটনারও সাক্ষী থেকেছে। ২০০৯ সালের মে। ১৫ তম লোকসভা নির্বাচন। বাম জমানার পতনের শুরু হয়েছিল সেই ভোট থেকেই। দমদম কেন্দ্রে ভোট গণনার দিন সকালেই বিজয় মিছিল শুরু করে সিপিআইএম। লাল আবির উড়িয়ে শুরু হয় উচ্ছ্বাস। ফল ঘোষণার পর দেখা যায় জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়। তারপর থেকে টানা তিন বার ওই কেন্দ্রে ঘাসফুল ফুটেছে।
উত্তরবঙ্গের তিন কেন্দ্রে ভোটের পর বিজয় মিছিল নিয়ে আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশচিক বরাইক বলেছেন, ‘আজকে পরীক্ষা আমরা দিলাম। পরীক্ষাতে রেজাল্ট কি হবে তার সংকেত আছে। সর্বোপরি বলব আমরা ধন্যবাদজ্ঞাপন করলাম আলিপুরদুয়ার জেলাবাসীকে। আমরা জেতার বিষয়ে কনফিডেন্ট।’ জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থীর মতে, ‘আমি যেটা দেখলাম, কর্মী যাঁরা রয়েছেন, নেতৃত্ব যাঁরা রয়েছেন, সবার মুখে একটা তৃপ্তির হাসি। আজকের ভোট প্রমাণ করে আমরা যে আশাবাদী ছিলাম, সেটা পূরণ হতে চলেছে।’
তৃণমূলকে পালটা জবাব দিয়েছে বিজেপি। জলপাইগুড়ির বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায় বলেছেন, ‘গণনার কি কোনও প্রয়োজন আছে। এখনই যদি বিজয় মিছিল করে। এর থেকে হাস্যকর কিছু হয় না। তৃণমূলের দিবাস্বপ্ন দিবাস্বপ্নই থেকে যাবে।’ বিজেপি নেতা তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের পদ্মপ্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘এই সব ড্রামাবাজি চলবে। ৪ জুনের পর বোঝা যাবে কে কোথায় আছে। তৃণমূল যত হারছে তত গলার আওয়াজ করছে। কমিশন থেকে শুরু করে সবাইকে গালাগালি দিচ্ছে। জিতলে গালাগালি দিচ্ছেন কেন। টেনশনটা আমরা বুঝি। সবই চাপ।’