খেলার সংজ্ঞা পরিবর্তন হতে শুরু করে। এই কাজটি করেছেন শ্রীলঙ্কা দলের ওপেনার রমেশ কালুভিথারনা (Ramesh Kalu Vitharana)। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন ইনিংস খেলেছিলেন যা বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। ১৯৯৬ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কা। এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে রমেশ কালুভিথার্নাকে ওপেনিংয়ে পাঠায়। ১৯৯০ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া কালুভিতারানা পাঁচ বছর পর ওপেনিংয়ের সুযোগ পান এবং তিনি এই কাজটি এমনভাবে করেছিলেন যে ক্রিকেটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিল।
সনত জয়সূর্যকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন কালুভিথর্ণা। জয়সূর্য তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যান। কিন্তু কালুভিথর্ণা ঝড়ো ইনিংস খেলতে থাকেন, সেটাও পাওয়ার প্লেতে। সে সময় ১৫ ওভারের মাত্র একটি পাওয়ারপ্লে ছিল। এমন ইনিংস খেলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা অবাক হয়ে গিয়েছিল। ৭৫ বলে ১২ টি চারের সাহায্যে ৭৭ রান করেন তিনি। মোট ১২৭ রানে আউট হন। তবে তিনি যে মঞ্চ তৈরি করেছিলেন তা দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল। রোশন মহানামা ৭১ বলে ৫১ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। শ্রীলঙ্কার পরীক্ষা-নিরীক্ষা অত্যন্ত সফল ছিল এবং ১৯৯৬ সালে তারা তাদের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল, যেখানে জয়সূর্য এবং কালুবিথার্নার ওপেনিং জুটি হিসেবে প্রতিপক্ষের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিল।
জয়াসুরিয়া ও কালুভিথর্ণা উদ্বোধনী জুটি এতটাই হিট হয়েছিল যে ক্রিকেটে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছিল। এই দুজনকে দেখে বাকি দলগুলোও তাদের ওপেনিং জুটিকে ঝড়ো ক্রিকেট খেলতে বলে। এরপর থেকে প্রতিটি দলই চায় এমন একটি ওপেনিং জুটি থাকুক, যারা দ্রুত রান তুলতে পারবে।
কালুভিথর্ণা ২০০৪ সালে অবসর নেন। এই সময়ে জঙ্গলে কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন তিনি। দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার উদাওয়ালাভে হাতির জন্য একটি সেন্টার খুলেছেন কালুভিথর্ণা। তিনি এই হাতিদের দুধ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া পশু শিকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি মানুষকে সচেতন করছেন যে তারা পশু শিকার করবেন না এবং তাদের মাংস বিক্রি করবেন না বা খাবেন না।