তিস্তার হড়পা বানে (teesta flood) তছনছ উত্তর সিকিমের একাংশ। নিখোঁজ সেনা থেকে সাধারণ মানুষ। আটকে বহু পর্যটক। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, জানা যাচ্ছে, উত্তর সিকিমের লাচুং-লাচেনে আটকে প্রায় ৩ হাজার পর্যটক। তার মধ্যে রয়েছেন বাঙালীরাও। আবহাওয়ার উন্নতি হলে চপার নামানোর পরিকল্পনা সিকিম প্রশাসনের। কোন পথে যোগাযোগ জানাচ্ছেন ট্যুর অপারেটরেরা। হেল্প লাইনে আসা তথ্যের ভিত্তিতে কোন কোন জেলার পর্যটকেরা আটকে তারও তথ্য তুলে ধরেছেন পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত ট্যুর অপারেটরেরা।
জানা গেছে, প্রশাসন এবং ট্যুর অপারেটরদের তরফে ভোলা হেল্পলাইন নম্বরে বহু পর্যটকের পরিবার পরিজন সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে এলাকাগুলিতে আটকে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হবে। যেহেতু বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেই কারণে বুধবার রাত্রি পর্যন্ত আটকে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয়নি।
উত্তরের পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ। সেখানে ২০০০ বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২০,০০০ মানুষ বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্যোগের রোষে পড়েছেন। ১৪ জন মৃত, সেনা সহ ৮২ জন নিখোঁজ। এমনকি সেখানে নিত্যসামগ্রীর আকাল দেখা গেছে। সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। গ্যাংটক অঞ্চলে গ্যাস সিলিন্ডারের ঘাটতি রয়েছে, বাচ্চাদের খাদ্যদ্রব্য যেমন-দুধ-এর সংকট তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, সেখানকার পেট্রোল পাম্পগুলি তেল শূন্য।
ট্যুর অপারেটরদের সংগঠনের নেতা সম্রাট সান্যাল জানিয়েছেন যে, পর্যটকদের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে তারা আটকে রয়েছেন। তাদের নামিয়ে আনতে সিকিম এবং বাংলা প্রকাশকদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে এই মরসুমে সিকিমে পর্যটন কার্যত বন্ধের মুখে। এই ঘটনার দায় এনএইচপিসি কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন সম্রাটবাবু। তার দাবি, এই পরিস্থিতি ম্যান মেড। তিনি বলেন, “তিস্তায় একাধিক ড্যাম,হোটেল,গাড়ির চাপ,টানেল ইত্যাদির কারণে মাটি তার ধারণ ক্ষমতা হারাচ্ছে।”
তার বক্তব্য, করোনা পরবর্তীকালে ফের আরও একবার কার্যত বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ত্রিশ হাজার মানুষ। বিগত সময়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে সরকার কীসের ভিত্তিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন তিনি।