মৌলবাদীদের চাপে ঢাকায় দুর্গা মন্দির গুঁড়িয়ে দিল ইউনুস সরকার

Yunus Government Demolishes Dhaka Durga Temple Amid Islamist Pressure

লক্ষ্মীবারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল দুর্গা মন্দির (Dhaka Durga Temple)। শুক্রবার রথ। তার আগের দিনই ধ্বংস ঢাকায় ধ্বংস দুর্গা মন্দির। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব নয়। রাজধানী শহরের দুর্গা মন্দিরে বুলডোজার চালাল বাংলাদেশ সরকার। পুলিশি পাহারায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হল মন্দির। ভেঙে ফেলা হল প্রতিমা। মৌলবাদীদের চাপে সংখ্যালঘুদের উপরে চড়াও হল মহম্মদ ইউনুসের সরকার।

Advertisements

ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার রাতে। ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার দুর্গা মন্দিরে হামলা চালায় একদল মৌলবাদী। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, মঙ্গলবার অর্থাৎ পরের দিন বেলা বারোটার মধ্যে মন্দির ভেঙে ফেলতে হবে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ওই মন্দির চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৌলবাদীদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলে। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। খিলক্ষেত থেকে মন্দির সরানোর দাবিতে অনড় ছিল মৌলবাদীরা। তাদের চাপের মুখে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয় ইউনুস সরকারকে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্দিরে চলে বুলডোজার। স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। চোখের সামনে ধ্বংস করে দেওয়া হয় মন্দির। বাইরে ফেলে দেওয়া হয় প্রতিমাগুলি। মন্দির ভাঙার আগে ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মহিলাদের সামাল দিতে প্রচুর মহিলা পুলিশকর্মীও ছিলেন। কয়েকজন বুলডোজারের সামনে দাঁড়িয়ে মন্দির বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। সব চেষ্টাই বৃথা গিয়েছে। পুলিশ সব প্রতিবাদীদের সরিয়ে দিয়েছে। মৌলবাদীদের চাপে মন্দির ধ্বংসের অভিযান সফল হয়েছে।

গত বছরের জুলাইয়ে কোটা আন্দোলনে উত্তাল হয় বাংলাদেশ। অগাস্টে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকে পদ্মাপাড়ে মহম্মদ ইউনুসের তদারকি সরকার। এই সরকারের জমানায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে। মন্দির বা গির্জায় হামলা-ভাঙচুর। সংখ্যালঘুদের খুন। মহিলাদের ধর্ষণ। বাড়ি বা দোকানে লুটপাট কিছুই বাদ যায়নি। তবে এ ধরনের বেশিরভাগ নির্যাতনই হচ্ছিল ঢাকার বাইরে। এবার ঢাকাতেই দাপট দেখাল মৌলবাদীরা। তাদের চাপের মুখে দুর্গা মন্দির ভেঙে ফেলতে হল প্রশাসনকে। আলোচনা করেও সমাধানসূত্র বের করতে পারেননি প্রশাসনিক কর্তারা।

Advertisements

ইউনুস সরকারের জমানায় আতঙ্কে থাকেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা। আতঙ্ক নিয়েই গত বছর দুর্গাপুজো করেছেন। এবার রথযাত্রাতেও আতঙ্ক। বাংলাদেশের প্রায় ৫০ জায়গায় রথযাত্রার আয়োজন করেছে ইসকন। এর মধ্যে ঢাকাতেও ১৪টি রথ বেরোবে। এই রথযাত্রা নিয়েও ফতোয়া দিয়েছে মৌলবাদীরা। মসজিদের সামনে দিয়ে রথ নিয়ে যাওয়া যাবে না। হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, আজানের সময় যেন রাস্তায় রথ না থাকে। রথযাত্রার আয়োজকরা স্পষ্ট বুঝতে পারছেন যে এগুলো হিংসা সৃষ্টির ছুঁতো। পান থেকে চুল খসলেই শুরু হবে তাণ্ডব। গুজব ছড়িয়েও তাণ্ডব চালাতে পারে মৌলবাদীরা। কারণ ২০২২ সালের দুর্গাপুজোর সময় এমনই হয়েছিল। মণ্ডপে কোরান উদ্ধার ঘিরে উত্তাল হয় বাংলাদেশ। একের পর এক মণ্ডপে হামলা চলে। ভাঙতুর করা হয়। অনেক মন্দিরে লুটপাট চলে। তারপর জানা যায়, মুসলিম ধর্মাবলম্বী একজন গবীর রাতে দুর্গা মণ্ডপে কোরান রেখে যায়। তা থেকেই অশান্তি ছড়ায় বাংলাদেশজুড়ে। কয়েকজনের প্রাণ যায়। এবারও কী তেমন কিছু হতে পারে। তাই রথযাত্রার আগে সাবধানী ইসকনের রথযাত্রার আয়োজকরা।