বেজিং: চিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলন ও সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ভারত বা চিনের সঙ্গে শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার দমদারিতে কথা বলা যায় না।”
পুতিনের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন শুল্কনীতি ও অর্থনৈতিক চাপকে হাতিয়ার করে এশিয়ার দুই বৃহত্তম শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। ভারত ও চিনকে “সহযোগী” আখ্যা দিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “ভারতের দেড়শো কোটি মানুষ, চিনও শক্তিশালী অর্থনীতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এদের নিজস্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও আইন রয়েছে। যদি কেউ বলে তোমাদের শাস্তি দেওয়া হবে, তখন ভাবতে হয়, এত বড় দেশের নেতৃত্ব প্রতিক্রিয়ায় কী পদক্ষেপ নিতে পারে?”
উপনিবেশবাদের প্রসঙ্গ টেনে পুতিন
ইতিহাসের ভার যে দিল্লি ও বেজিং-এর রাজনৈতিক আচরণে প্রভাব ফেলছে, তাও তুলে ধরেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, “উপনিবেশবাদ, সার্বভৌমত্বের ওপর দীর্ঘমেয়াদি কর আরোপ— এই কঠিন সময় তারা পেরিয়েছে। আজ যদি নেতৃত্ব দুর্বলতা দেখায়, তবে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ। তাই এই ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা তাদের আচরণকে প্রভাবিত করে।”
মার্কিন কূটনৈতিক ভাষার সমালোচনায় পুতিন বলেন, “ঔপনিবেশিক যুগ শেষ। এখনো যদি সেই মানসিকতায় কথা বলা হয়, তবে তা একেবারেই অচল।”
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি vladimir putin on us india relations
অন্যদিকে, ভারতীয় তেলের বাজারে রাশিয়ার সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক নিয়ে ফের কঠোর অবস্থান নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ঘোষণা করেছেন, রুশ তেল কেনার জন্য ভারতের উপর ইতিমধ্যেই সেকেন্ডারি স্যাংশন আরোপ করা হয়েছে এবং সামনের দিনে আরও নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। ট্রাম্পের ভাষায়, “দু’সপ্তাহ আগে আমি সতর্ক করেছিলাম, যদি ভারত কেনে, তবে বড় সমস্যায় পড়বে। আর এখন সেটাই ঘটছে।”
তিনি দাবি করেন, এই পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই মস্কোর কয়েক লক্ষ কোটি ডলারের ক্ষতি করেছে। এখনো টেবিলে রয়েছে ‘ফেজ টু’ এবং ‘ফেজ থ্রি’ স্যাংশনের সম্ভাবনা।
ইউক্রেন নিয়ে ভারতের ভূমিকায় প্রশংসা
তবে একই সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “ইউক্রেন সংকট মেটাতে চিন, ভারত এবং আমাদের অন্যান্য কৌশলগত সহযোগীদের প্রচেষ্টা ও প্রস্তাব আমরা উচ্চমূল্যায়ন করি।”
প্রেক্ষাপট
ভারত বর্তমানে রুশ তেল কেনার কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি, অন্যদিকে চিনের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বাণিজ্যযুদ্ধ অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে এসসিও সম্মেলনের মঞ্চ থেকে পুতিনের স্পষ্ট বার্তা— এশিয়ার দুই মহাশক্তিকে দমিয়ে রাখা সহজ নয়, বরং তাদের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক দৃঢ়তা মার্কিন কৌশলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে।
World: Russian President Vladimir Putin has openly attacked the US administration, warning that it’s impossible to use tariffs and sanctions to pressure major powers like India and China, who have their own strong political systems.