ট্রাজেডির আভাসে প্রেসিডেন্ট হওয়ার বার্তা ভ্যান্সের

Vance wants to be the president of America

আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স (JD Vance)সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছেন। তিনি বলেছেন, যদি কোনো ‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি’ ঘটে, তবে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত। ৪১ বছর বয়সী ভ্যান্স, যিনি মার্কিন ইতিহাসের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট, এই মন্তব্যটি করেছেন।

Advertisements

হোয়াইট হাউসে একটি নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন । তিনি বলেন, “আমি আত্মবিশ্বাসী যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুস্থ আছেন এবং তাঁর মেয়াদ শেষ করবেন। তবে, ঈশ্বর না করুন, যদি কোনো ভয়াবহ ঘটনা ঘটে, তবে গত ২০০ দিনে আমি যে প্রশিক্ষণ পেয়েছি, তা আমাকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত করেছে।”

   

জেডি ভ্যান্সের উত্থান

জেডি ভ্যান্স, যার পুরো নাম জেমস ডেভিড ভ্যান্স, একজন রিপাবলিকান রাজনীতিবিদ, লেখক, এবং মার্কিন মেরিন কর্পসের প্রাক্তন সদস্য। তিনি ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ওহাইওর সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে তিনি আমেরিকার ৫০তম ভাইস প্রেসিডেন্ট।

২০২৪ সালের নির্বাহী নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিং মেট হিসেবে তিনি কমলা হ্যারিস এবং টিম ওয়ালজের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন। ভ্যান্স মিলেনিয়াল প্রজন্মের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মার্কিন মেরিন কর্পস থেকে আগত প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২২ সালে, যখন তিনি ওহাইওর সিনেট নির্বাচনে জয়ী হন।

‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি’ মন্তব্যের প্রেক্ষাপট

ভ্যান্সের এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি ৭৮ বছর বয়সে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে প্রবীণ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন, তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনা চলছে। ভ্যান্স তাঁর মন্তব্যে জোর দিয়েছেন যে তিনি ট্রাম্পের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে আশাবাদী।

কিন্তু একই সঙ্গে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ এটি ভ্যান্সের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তাঁর অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করেছে।

Advertisements

রাজনৈতিক অবস্থান এবং বিতর্ক

জেডি ভ্যান্স নিজেকে জাতীয় রক্ষণশীল এবং ডানপন্থী পপুলিস্ট হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি গর্ভপাত, সমকামী বিবাহ এবং বন্দুক নিয়ন্ত্রণের বিরোধী। তিনি শিশুহীনতার বিরুদ্ধে সরব এবং ক্যাথলিক ধর্মতত্ত্বের প্রভাবে তাঁর রাজনৈতিক দর্শন গড়ে উঠেছে। তবে, তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা বিতর্কমুক্ত নয়।

২০১৬ সালে তিনি ট্রাম্পের সমালোচনা করেছিলেন, এমনকি তাঁকে ‘আমেরিকার হিটলার’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন এবং তাঁর নীতির প্রবল সমর্থক হয়ে ওঠেন। এই রূপান্তর তাঁকে কিছু সমালোচকের কাছে ‘দ্বিচারী’ বলে অভিহিত করেছে।

ভ্যান্সের ২০২৮ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা নিয়েও আলোচনা চলছে। তিনি রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির ফিনান্স চেয়ার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন, যা তাঁকে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য তহবিল সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করবে। এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাঁর ভবিষ্যৎ উচ্চাকাঙ্ক্ষার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

সমবায় ভোটে শূন্য তৃণমূল, সবকটি আসনে বিজেপি জয়ী

জনমত এবং প্রতিক্রিয়া

ভ্যান্সের এই মন্তব্য জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ তাঁর আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করলেও, অনেকে এটিকে অকালপ্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন। তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর একটি জরিপে দেখা গেছে, তাঁর অনুকূল রেটিং ৪০.৭% এবং প্রতিকূল রেটিং ৪২.৫%। তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য, যেমন ‘শিশুহীন বিড়াল মহিলা’ বা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে মন্তব্য, তাঁর ইমেজের উপর প্রভাব ফেলেছে।