ওয়াশিংটন: ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে ভারতে প্রত্যার্পণে অনুমতি দিল আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে যে জঙ্গি হামলা হয়েছিল, তাতে প্রত্যক্ষভাবে যোগ ছিল তাঁর৷ ভারতীয় গোয়েন্দারা এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী রানাকে ভারতে নিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করে নয়াদিল্লি। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁকে এ দেশে প্রত্যর্পণের জন্য যৌথ ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত এবং আমেরিকা৷ তবে আইনি জটিলতার কারণে এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছিল।
লস অ্যাঞ্জেলেসের কারাগারে বন্দি রানা
রানা বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি কারাগারে বন্দি আছেন। তাঁকে ২০০৯ সালে শিকাগো থেকে গ্রেফতার করে এফবিআই। তিনি পাকিস্তান বংশোদ্ভূত আমেরিকান ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ যিনি ছিলেন মুম্বই হামলার মূল চক্রী৷ ‘দাউদ গিলানি’ নামে পরিচিত হেডলি মুম্বই হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন৷ বর্তমানে আমেরিকার জেলে বন্দি তিনি৷ ৩৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
রানা ও হেজলির সঙ্গে লস্কর যোগ
তাহাওয়ার রানা ও ডেভিড হেডলি উভয়ই পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র সদস্য ছিলেন৷ তাঁদের তৈরি নীল নকশা অনুসরণ করেই ২০০৮ সালে আরবসাগরের তীরে ভায়বহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে৷ মুম্বইয়ের বড় বড় হোটেল, টার্মিনাসগুলিকে হামলা চালায় ১০ জঙ্গি৷ যাদের মধ্যে একমাত্র আজমল আমির কাশবকে জীবিত গ্রেফতার করে পুলিশ৷ পরে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ ওই জঙ্গি হামলায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়৷ আহতের সংখ্যাও বহু৷ মুম্বই হামলায় ১৬৬ জন নিহতের মধ্যে ছ’জন মার্কিন নাগরিকও ছিলেন। ওই হামলায় পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানার স্পষ্ট যোগ মিলেছে৷
প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে প্রথমে নিম্ন আদালতে, পরে ওয়াশিংটনের প্রাদেশিক আদালতে আবেদন করেছিলেন রানা। কিন্তু, কোথাও কোনও সুরাহা পাননি। সান ফ্রান্সিসকোর আপিল আদালত প্রত্যর্পণের পক্ষে রায় দেওয়ার পর আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টও রানাকে প্রত্যর্পণের অনুমতি দিল।