‘‘সম্পর্ক ভালো, কিন্তু…’’ শুল্ক বিতর্কে ভারতকে আক্রমণ ট্রাম্পের

ওয়াশিংটন: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে ফের সরব হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার ওভাল অফিস থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সরাসরি অভিযোগ তুললেন, ভারত বিশ্বের…

US India trade relations

ওয়াশিংটন: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে ফের সরব হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার ওভাল অফিস থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সরাসরি অভিযোগ তুললেন, ভারত বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক চাপিয়ে আমেরিকাকে দীর্ঘদিন ধরে একপেশে চুক্তির মধ্যে রেখেছে।

ট্রাম্প বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো হলেও বহু বছর ধরে তা একপেশে ছিল। আমি ক্ষমতায় আসার পরই আমরা শক্তভাবে প্রশ্ন তুলেছি। ভারত আমাদের উপর বিপুল শুল্ক চাপাত, প্রায় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি-যার ফলে আমরা ভারতে ব্যবসা করতে পারিনি, অথচ তারা আমেরিকায় নির্বিঘ্নে পণ্য পাঠিয়েছে।”

   

হার্লে-ডেভিডসনের উদাহরণ

ভারতের শুল্কনীতির কারণে আমেরিকার বিখ্যাত মোটরবাইক সংস্থা হার্লে-ডেভিডসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ভারতে বাইক রফতানিতে ২০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছিল। ফলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতে কারখানা স্থাপন করতে বাধ্য হয়, যাতে দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে শুল্ক এড়ানো যায়। ট্রাম্পের ভাষায়, “এটাই ভারতের কৌশল, যা আমাদের জন্য অন্যায়।”

‘‘আমরা বদল আনছি’’: ট্রাম্প US India trade relations

ট্রাম্প আরও জানান, তাঁর প্রশাসনের কঠোর নীতি ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের ফলে বহু সংস্থা আমেরিকায় ফিরে আসছে। “হাজার হাজার কোম্পানি এখন আমেরিকায় বিনিয়োগ করছে। নতুন নতুন গাড়ির কারখানা তৈরি হচ্ছে। তারা চিন, মেক্সিকো, কানাডা থেকে সরে এসে আমাদের দেশে কারখানা গড়ছে,” মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ভারত শুল্ক কমাতে রাজি, দাবি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, নয়াদিল্লি শুল্ক শূন্যে নামাতে রাজি হয়েছে, তবে তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘‘এখনও দেরি হয়ে যাচ্ছে।’’

একই সঙ্গে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, “ভারত আমেরিকার সবচেয়ে বড় গ্রাহক হলেও তারা আমাদের কাছ থেকে সামান্য কিনেছে। বহু দশক ধরে এই সম্পর্ক একতরফা ছিল।”

Advertisements

নয়াদিল্লির পাল্টা অবস্থান

অন্যদিকে, ওয়াশিংটনের চাপের মুখেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, কৃষক, ক্ষুদ্রশিল্প ও দুগ্ধখাতের স্বার্থে ভারত কোনও ছাড় দেবে না। “কৃষক, মৎস্যজীবী ও পশুপালকদের স্বার্থই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। এর জন্য যদি বড় মূল্যও চুকোতে হয়, ভারত তার জন্য প্রস্তুত,” বলেন মোদী।

কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এল, যখন তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনের ফাঁকে মোদী পৃথকভাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। মার্কিন চাপ উপেক্ষা করেই নয়াদিল্লি মস্কো থেকে তেল ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা চালিয়ে যাচ্ছে।

ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই চাপা টানাপোড়েনের সাক্ষী। ট্রাম্প প্রশাসনের পাল্টা শুল্ক আরোপ ও নয়াদিল্লির অভ্যন্তরীণ স্বার্থরক্ষার কৌশল—দুই দেশের সম্পর্ককে এক নতুন পরীক্ষার সামনে দাঁড় করিয়েছে।

World: President Donald Trump reignites the debate on US-India trade relations, alleging India’s high import tariffs create an unfair, one-sided deal. Citing Harley-Davidson’s struggles, Trump vows to reverse this imbalance to bring manufacturing back to America.