নয়াদিল্লি: সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় আন্দোলনে উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর (poK)। সোমবার শাহবাজ-সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষভে নেমেছে আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (AAC)। PoK-তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার বিক্ষোভে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দোকানপাট, গাড়িচলাচলও অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত।
পাকিস্তানের ‘কোণঠাসা’ মানুষের বিপ্লব
ভারতের কাছে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বলে পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে আস্ফালন করলেও সেখানকার মানুষের জীবন যে দুর্বিষহ করে তুলেছে সরকার, তার আভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। বিগত কয়েক মাস ধরে শাহবাজ-সরকারের (Shehbaz Sharif) “দুয়োরাণী সুলভ” আচরণে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন PoK-বাসী। কয়েক দশক ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রান্তিককরণ এবং অর্থনৈতিক অবহেলার কথা উল্লেখ করে আসছিল অর্জনকারী নাগরিক সমাজের জোট বা AAC।
তাঁরা পাক-সরকারের কাছে ৩৮-দফা সনদে কাঠামোগত সংস্কারের দাবি করেন। যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানে বসবাসকারী কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পাক অধিকৃত কাশ্মীর বিধানসভার ১২টি আইনসভা আসন বাতিল করা। অন্যান্য অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে ভর্তুকিযুক্ত আটা, মংলা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সাথে যুক্ত ন্যায্য বিদ্যুতের শুল্ক এবং ইসলামাবাদ কর্তৃক প্রতিশ্রুত দীর্ঘ বিলম্বিত সংস্কার বাস্তবায়ন।
প্রসঙ্গত, কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য বিধানসভায় আসন সংরক্ষণের জন্য স্থানীয়রা কম সুযোগ পান বলে দাবি করে হয়। AAC-এর কোর কমিটির এক নেতা শৌকত নওয়াজ মীর বলেন, “দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে আমাদেরকে যে আশা দেখানো হয়েছে, প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা পূরণের দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন। এটি আমাদের অধিকারের আন্দোলন। হয় পাক আমাদের দাবি পূরণ হবে নয়ত, কাশ্মীরের মানুষের ভয়ংকর ক্রোধ দেখবে সরকার”।
সরকারি দমনপীড়ন
বলা বাহুল্য, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষের ক্ষোভের আগুনে কার্যত ঘৃতাহুতির কাজ করে পাক-সরকারের সাম্প্রতিক কঠোর দমনপীড়ন! ইদানিং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রধান শহরগুলিতে পতাকা মিছিল করে দেশের ভারী সশস্ত্র কনভয়। শনিবার এবং রবিবার পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির প্রবেশপথগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সংবেদনশীল এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। সেইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট। যার ফলে মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। AAC আলোচক, PoK প্রশাসন এবং ফেডারেল মন্ত্রীদের মধ্যে ম্যারাথন আলোচনার নাটকীয় ভাঙ্গনের পর এই কঠোর নিরাপত্তা জারি করা হয়। কমিটি AAC-র দাবি মানতে রাজি না হওয়ায় “আলোচনা অসম্পূর্ণ এবং অমীমাংসিত”, বলে ঘোষান করে AAC নেতা মীর বন্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।