লস্কর-ই-তৈবা (lashkar)-র শীর্ষ জঙ্গি সাইফুল্লাহ খালিদ, যিনি ভারতে একাধিক উল্লেখযোগ্য জঙ্গি হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ।
খালিদ (lashkar) তিনটি বড় হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন, ২০০৫ সালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস (আইএসসি) হামলা, ২০০৬ সালে নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) সদর দপ্তরে হামলা এবং ২০০৮ সালে উত্তরপ্রদেশের রামপুরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলা।
এই হামলাগুলো তিন বছরের ব্যবধানে সংঘটিত হয়েছিল, যা বহু প্রাণহানির কারণ হয় এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে এলইটি-র কার্যক্রমের ব্যাপক প্রসারকে চিহ্নিত করে।
সাইফুল্লাহ খালিদের পরিচয় ও কার্যক্রম (lashkar)
সাইফুল্লাহ খালিদ, (lashkar)যিনি ‘ভিনোদ কুমার’ ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন, বহু বছর ধরে নেপালে বসবাস করেছিলেন। সেখানে তিনি একটি মিথ্যা পরিচয়ে জীবনযাপন করতেন এবং স্থানীয় নারী নাগমা বানুকে বিয়ে করেছিলেন। নেপাল থেকে তিনি এলইটি-র জন্য সমন্বয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন, নিম্ন প্রোফাইল বজায় রেখে নিয়োগ এবং লজিস্টিকসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।
সম্প্রতি তিনি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাদিন জেলার মাতলি এলাকায় তাঁর ঘাঁটি স্থানান্তর করেছিলেন। সেখানে তিনি রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধ পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা এবং এর সম্মুখ সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার জন্য কাজ চালিয়ে যান, প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের জন্য নিয়োগ এবং তহবিল সংগ্রহের উপর জোর দিয়ে।
খালিদ (lashkar)ভারতে তিনটি বড় জঙ্গি হামলার পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। ২০০৫ সালের বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি) হামলায় একজন অধ্যাপক নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
২০০৬ সালে নাগপুরে আরএসএস সদর দপ্তরে হামলা ছিল সংগঠনের প্রতীকী গুরুত্বের কারণে উল্লেখযোগ্য। ২০০৮ সালে রামপুরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলায় সাতজন নিরাপত্তা কর্মী নিহত হন। এই হামলাগুলো এলইটি-র ভারতের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
নিহতের প্রেক্ষাপট
সাইফুল্লাহ খালিদ (lashkar)রবিবার সিন্ধু প্রদেশের মাতলি তালুকায় অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের হামলায় নিহত হন। তিনি একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদ সালিম, খালিদ, ওয়ানিয়াল, ওয়াজিদ এবং সালিম ভাই।
তিনি এলইটি-র কার্যক্রমে নিয়োগ, (lashkar)তহবিল সংগ্রহ এবং সীমান্তের ওপারে অনুপ্রবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর নিহত হওয়ার ঘটনা ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এই ঘটনার আগে, গত সপ্তাহে দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এলইটি-র আরও তিন জঙ্গি নিহত হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ‘অপারেশনস কমান্ডার’ শাহিদ কুত্তায়, শোপিয়ানের বান্দুনা মেলহুরা এলাকার বাসিন্দা আদনান শফি এবং পার্শ্ববর্তী পুলওয়ামা জেলার মুররান এলাকার বাসিন্দা আহসান উল হক শেখ।
এই সংঘর্ষ শুক্রু কেলার এলাকায় সংঘটিত হয়, যেখানে দুটি একে সিরিজের রাইফেল, প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ, গ্রেনেড এবং অন্যান্য যুদ্ধ-সংক্রান্ত সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। কুত্তায় দক্ষিণ কাশ্মীরে এলইটি-র অপারেশনস কমান্ডার হিসেবে কাজ করতেন এবং কাশ্মীরে জঙ্গি নিয়োগকে উৎসাহিত করতেন। তিনি অনেক যুবককে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলেন এবং বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানির জন্য দায়ী ছিলেন বলে একজন কর্মকর্তা পিটিআই নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট
সাইফুল্লাহ খালিদের (lashkar)নিহত হওয়ার ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। গত ৭ মে, ভারত পাকিস্তানের মুরিদকে এলইটি-র মার্কাজ তাইবা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্ভুল হামলা চালায়, যা ‘অপারেশন সিঁদুর ’ নামে পরিচিত। এই হামলায় মুরিদকের সুবিধা ধ্বংস হয়ে যায়, যেখানে ২৬/১১ মুম্বাই হামলার অপরাধী আজমল কাসাব এবং এলইটি-র গোয়েন্দা ডেভিড কোলম্যান হেডলি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
এই হামলার আগে, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে একটি জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য এলইটি-র সঙ্গে যুক্ত দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)-কে দায়ী করে, যাকে তারা এলইটি-র একটি সম্মুখ সংগঠন বলে মনে করে। ‘অপারেশন সিঁদুর ’-এর অধীনে ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায়, যার মধ্যে এলইটি এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তরও ছিল।
Triumph Scrambler 400 XC তিন নতুন রঙে বাজারে কাঁপাবে, বাইকপ্রেমীরা ‘ফিদা’ হবেন!
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
সাইফুল্লাহ খালিদের (lashkar)নিহত হওয়ার খবর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। “শীর্ষ এলইটি কমান্ডার সাইফুল্লাহ খালিদ, যিনি ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার পরিকল্পনায় অভিযুক্ত, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে ‘অজ্ঞাত ব্যক্তিদের’ দ্বারা নিহত হয়েছেন।” এই পোস্টগুলো জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, অনেকে এটিকে ভারতের নিরাপত্তা প্রচেষ্টার সাফল্য হিসেবে দেখছেন।
ভবিষ্যৎ প্রভাব
সাইফুল্লাহ খালিদের নিহত হওয়া এলইটি-র কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে তাদের নিয়োগ এবং তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে। তবে, এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই অঞ্চলে এলইটি-র কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, এবং খালিদের নিহত হওয়া তাদের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই ঘটনা ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী (lashkar)কৌশল এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার গতিশীলতার উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। সাইফুল্লাহ খালিদের মতো শীর্ষ সন্ত্রাসী হত্যা এলইটি-র কাঠামোকে দুর্বল করতে পারে, তবে এটি নতুন নেতৃত্বের উত্থান এবং প্রতিশোধমূলক হামলার ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে।