কাঠমান্ডু: নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Nepal’s Tribhuvan Airport) রবিবার (৩ আগস্ট) দুই ভারতীয় নাগরিককে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তার (Indians Arrested) করেছে নেপাল পুলিশ। পুলিশের সংবাদ বুলেটিন অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন হলেন ৩২ বছর বয়সী মৌলেশ্বরণ এন কারুনাই ভেল, যার কাছ থেকে ৪ কিলোগ্রামের সামান্য বেশি সাদা হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ব্যাংকক থেকে কাঠমান্ডুতে এসেছিলেন, এবং নিরাপত্তা তল্লাশির সময় তার স্যুটকেসে এই মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। দ্বিতীয় ব্যক্তির পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি, তবে পুলিশ জানিয়েছে যে তদন্ত চলছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের নেপালের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০৩৩ (১৯৭৬) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনা নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারির আরেকটি উদাহরণ। নেপাল পুলিশের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর মুখপাত্র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ যোগেন্দ্র কুমার খাডকা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সন্দেহজনক ব্যাগেজের উপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মাদক পাচারের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। তদন্তের জন্য তাদের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নেপালের আইন অনুযায়ী, ১০ কিলোগ্রামের বেশি মাদক পাচারের অপরাধে ২ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫,০০০ থেকে ১,০০,০০০ নেপালি রুপি জরিমানার বিধান রয়েছে। যদিও এই ক্ষেত্রে মৌলেশ্বরণের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত হেরোইনের পরিমাণ ৪ কিলোগ্রামের কিছু বেশি, তবুও এটি একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হেরোইনের মতো শক্তিশালী মাদকদ্রব্যের পাচার আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চ মূল্যের জন্য কুখ্যাত, এবং এটি নেপালকে মাদক পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
গত কয়েক মাসে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে একাধিক মাদক পাচারের ঘটনা ধরা পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের জুন মাসে একজন ভারতীয় নাগরিক এবং একজন থাই নাগরিককে ১০.৪২ কিলোগ্রাম মারিজুয়ানাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এছাড়া, এপ্রিল মাসে তিনজন ভারতীয় নাগরিককে ৪৬ কিলোগ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনাগুলো নেপালের বিমানবন্দরে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারির প্রমাণ দেয়।
এই গ্রেপ্তারি ভারত-নেপালের উন্মুক্ত সীমান্তের অপব্যবহারেরও ইঙ্গিত দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সীমান্তের মাধ্যমে মাদক পাচারের প্রবণতা বেড়েছে, যা উভয় দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয়। নেপাল পুলিশ এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই ধরনের অপরাধ দমনে যৌথভাবে কাজ করছে। গোকুলাম কেরালা এফসি-র মতো সংস্থাগুলোও সম্প্রতি ক্রীড়া জগতে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে, তবে এই ধরনের ঘটনা দেশের আন্তর্জাতিক ইমেজের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
মৌলেশ্বরণ এবং তার সঙ্গীর গ্রেপ্তারি এই অঞ্চলে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, এই ঘটনা কেবলমাত্র আইসবার্গের চূড়া হতে পারে। আন্তর্জাতিক মাদক পাচার নেটওয়ার্কের গভীরে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেপাল পুলিশ এখন আরও তৎপর। এই ঘটনা ভারত ও নেপালের মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে, যাতে এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।