সিরিয়ায় সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানে বাশার-আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল। বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তুর্কি সমর্থিত এই সশস্ত্র বিদ্রোহীরা ক্ষমতা গ্রহণের পর, এখন প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোগান তার কার্ড খুলছেন। তুরস্কের একটি পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। যদি রিপোর্টগুলি বিশ্বাস করা হয়, তুরস্ক এবং সিরিয়ার মধ্যে শীঘ্রই একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
2টি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা
এই যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুসারে, যুদ্ধের ক্ষেত্রে, তুর্কি তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াকে রক্ষা করতে বাধ্য থাকবে। সিরিয়ায় দুটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে তুরস্ক। এগুলোর ওপর F-16-এর মতো যুদ্ধবিমান মোতায়েন করার কথা ভাবা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সিরিয়ান আর্মিকে প্রশিক্ষণও দেবে তুরস্ক।
তুরস্কে সিরিয়ায় অনেক রাডার স্টেশনও স্থাপন করবে। এর মাধ্যমে তুরস্ক ও ইজরায়েলের মধ্যে একটি বাফার জোন তৈরি করা হবে। সিরিয়ায় ইজরায়েলি বিমান ঢুকলে রাডার স্টেশনের মাধ্যমে সব তথ্য পাবে তুরস্ক।
এতে উপকৃত হবে তুরস্ক
তুর্কি এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে তার অনেক স্বার্থ অনুসরণ করছে। তু্রস্কে ইতিমধ্যে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদের সাথে লড়াই করছে। তুর্কি, ইরান, ইরাক ও সিরিয়ায় বসবাসকারী কুর্দিরা বহু দশক ধরে স্বাধীন কুর্দিস্তানের দাবি জানিয়ে আসছে। একই সময়ে, তুর্কি সরকার কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদ দমন করতে সামরিক পদক্ষেপ নেয়। ইরাক ও সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের বাড়তে থেকে শক্তিও তুরস্কের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটির মাধ্যমে কুর্দিদের তৎপরতার ওপর সরাসরি নজর রাখতে পারবে তুর্কি। এছাড়া সিরিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এর সংস্থানও থাকবে।
এ ছাড়া সিরিয়ায় উপস্থিতির ভিত্তিতে ইজরায়েলের ওপরও গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে। সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে বিদ্রোহী ও দামেস্কের ওপর প্রভাব বাড়াতে পারে। উল্লেখ্য, সিরিয়ায় অভ্যুত্থানের সময় তুরস্ক বিদ্রোহীদের অনেক সাহায্য করেছিল। আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার জন্য বিদ্রোহীদের মধ্যে তুর্কি সেনা কমান্ডোরাও জড়িত ছিল বলেও অনেক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল।