ট্রাম্প–শি ফোনালাপ! এপ্রিলে বেজিং সফরে যাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

trump-xi-phone-call-april-2026-beijing-visit-state-visit-invitation

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ফোনালাপকে কেন্দ্র করে আবারও নতুন গতি পেল ওয়াশিংটন–বেজিং কূটনীতি। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, ভূরাজনীতি ও কৌশলগত সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয় বলে ট্রাম্প তাঁর অফিসিয়াল বিবৃতিতে উল্লেখ করেন। ট্রাম্প সোস্যাল মিডিয়ায় তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জানান—এই আলোচনার পর আমেরিকা–চীন সম্পর্ক “extremely strong” অবস্থায় রয়েছে।

Advertisements

ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ, ফেন্টানাইল পাচার, সয়াবিন ও কৃষিপণ্য বাণিজ্যসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাই এই ফোনালাপে উঠে এসেছে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, দুই দেশের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গেছে এবং বহু পুরোনো চুক্তির ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই নিজেদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে কাজ করছে।

   

🔶 “We have done a very good and very important deal for our Great Farmers” — ট্রাম্প

ট্রাম্প দাবি করেন, আমেরিকান কৃষকদের জন্য চীনের সঙ্গে একটি “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ” বাণিজ্যিক চুক্তি কার্যকর হয়েছে এবং তিনি আশা করছেন এটি আরও উন্নত হবে। আমেরিকার মধ্য-পশ্চিমের কৃষক শক্তিই তাঁর রাজনৈতিক ভিত্তির অন্যতম স্তম্ভ; ফলে “Great Farmers”-কে কেন্দ্র করে দেওয়া এই বার্তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

চীনের সঙ্গে কৃষিপণ্য বাণিজ্য বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি জটিল বিষয়—কারণ সয়াবিন আমেরিকার অন্যতম বড় রপ্তানি পণ্য, এবং পূর্বে যেসব বাণিজ্যযুদ্ধে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তার কেন্দ্রে ছিল এই ক্ষেত্রটিই।

🔶 সফল দক্ষিণ কোরিয়া বৈঠকের পরই নতুন অগ্রগতি

ট্রাম্প উল্লেখ করেন, তিন সপ্তাহ আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত একটি সফল দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে নতুন অগ্রগতি শুরু হয়েছে। এই ফোনালাপ সেই আলোচনার সরাসরি পরিপূরক। তাঁর ভাষায়—

“We can now set our sights on the big picture.”

বিশ্লেষকদের মতে, বিগত কয়েক বছরের উত্তেজনা ও বাণিজ্যসংঘাত প্রশমনের জন্য দুই দেশই আবারও স্থিরভাবে আলোচনার দিকে এগোচ্ছে।

🔶 এপ্রিল ২০২৬-এ ট্রাম্পের বেজিং সফর, শি-ও আসবেন মার্কিন রাষ্ট্রীয় সফরে

সবচেয়ে বড় ঘোষণা—

শি জিনপিং ট্রাম্পকে এপ্রিল ২০২৬-এ বেজিং সফরের আমন্ত্রণ জানান, এবং ট্রাম্প জানান তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন

সেইসঙ্গে, ট্রাম্প পাল্টা আমন্ত্রণ জানান শি-কে—

“He will be my guest for a State Visit in the U.S. later in the year.”

রাষ্ট্রীয় সফর (State Visit) দুই দেশের সম্পর্কের সর্বোচ্চ স্তরের কূটনৈতিক বিনিময়। এই ধরনের সফর সাধারণত কৌশলগত পরিবর্তন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক নীতির অভিন্ন অবস্থানের সূচক হিসেবে বিবেচিত।

Advertisements

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০২6 সালে আমেরিকা–চীন সম্পর্ক নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

🔶 ফেন্টানাইল, ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ ও বাণিজ্য—সবই আলোচনায়

ট্রাম্প বলেন, ফোনালাপে ফেন্টানাইল পাচার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচনায় আসে। যুক্তরাষ্ট্রে অপিয়ড সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ফেন্টানাইল নিয়ে চাপ তার প্রশাসনের মুখ্য অগ্রাধিকার।

এ ছাড়া ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ ক্ষয়িষ্ণু বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। চীন এই যুদ্ধে মধ্যস্থতার ইচ্ছা দেখালেও যুক্তরাষ্ট্র সংক্রান্ত জটিলতা এখনো অমীমাংসিত।

🔶 “Communication often is important” — বার্তা দিলেন ট্রাম্প

ট্রাম্প বারবার জোর দিয়ে বলেন—চীনের সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন।

তিনি বলেন—

“We agreed that it is important that we communicate often, which I look forward to doing.”

এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি স্পষ্ট বার্তা—দুই দেশই উত্তেজনা কমিয়ে স্থিতিশীলতার দিকে এগোতে চাইছে।

🔶 সামগ্রিক মূল্যায়ন

এই ফোনালাপ যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত বহন করছে।

  • ট্রাম্পের বেজিং সফর

  • শি-র আমেরিকা সফরের আমন্ত্রণ

  • চলমান বৈশ্বিক সংকটে দুই দেশের সহযোগিতার ইঙ্গিত

  • কৃষি, বাণিজ্য, ফেন্টানাইল সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধ সবই আলোচনার কেন্দ্রে

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ সাল হবে মার্কিন–চীন সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর—বিশ্ব ক্ষমতার ভারসাম্যে যার বহুমাত্রিক প্রভাব পড়তে পারে।