ওয়াশিংটন: রাষ্ট্রসংঘ সফরকে ঘিরে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউইয়র্কে এক দিনের সফরে পরপর তিনটি প্রযুক্তিগত বিপর্যয়কে তিনি কেবল দুর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ। ট্রাম্পের দাবি, এটি ছিল সুচিন্তিত নাশকতার পরিকল্পনা। তদন্তে ইতিমধ্যেই হাত দিয়েছে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস।
এস্কেলেটর বিপর্যয় দিয়ে সূত্রপাত
প্রেসিডেন্টের কথায়, ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয় এস্কেলেটর বিপর্যয় দিয়ে। মূল বক্তৃতামঞ্চে ওঠার ঠিক আগেই হঠাৎ থেমে যায় এস্কেলেটর। ট্রাম্পের ভাষায়, “আমি আর মেলানিয়া অল্পের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছি। যদি দু’জনেই হাতল শক্ত করে না ধরে থাকতাম, মুখ থুবড়ে পড়ে মারাত্মক আঘাত লাগতে পারত। এটি নিছক কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, বরং পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।” তিনি লন্ডনের টাইমস পত্রিকার একটি প্রতিবেদনও উদ্ধৃত করেন, যেখানে রাষ্ট্রসংঘ কর্মীদের মধ্যে এস্কেলেটর ‘বন্ধ করে দেওয়ার রসিকতার’ উল্লেখ রয়েছে।
এরপর দ্বিতীয় ধাক্কা—রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়েই বন্ধ হয়ে যায় টেলিপ্রম্পটার। প্রায় পনেরো মিনিট সম্পূর্ণ অন্ধকার পর্দার সামনে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে বক্তৃতা চালিয়ে যান। পরে তিনি গর্ব করে জানান, “আমার হঠাৎ করা বক্তৃতা অসাধারণ প্রশংসা পেয়েছে। কিন্তু এর আড়ালে নাশকতার গন্ধ স্পষ্ট।”
শেষ আঘাত সাউন্ড সিস্টেমে Trump UN Sabotage Claim
শেষ আঘাত আসে সাউন্ড সিস্টেমে। অডিটোরিয়ামের ভেতর হঠাৎই শব্দপ্রবাহ ভেঙে পড়ায় অধিকাংশ প্রতিনিধি কেবল দোভাষীর ইয়ারপিস দিয়েই তাঁর বক্তব্য শুনতে সক্ষম হন। “আমার বক্তৃতার শেষে মেলানিয়া এসে বললেন, তিনি একটি শব্দও শুনতে পাননি। এটা নিছক কাকতালীয় হতে পারে না, এটি স্পষ্টতই ত্রিমুখী নাশকতার অংশ,” মন্তব্য ট্রাম্পের।
তিনি আরও জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিবকে চিঠি লিখে এই ঘটনাগুলির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করবেন এবং নিরাপত্তা ক্যামেরার সব ফুটেজ সংরক্ষণের অনুরোধ করবেন। “সিক্রেট সার্ভিস ইতিমধ্যেই নেমেছে। বিষয়টি হালকা ভাবে নেওয়া যাবে না,” স্পষ্ট হুঁশিয়ারি প্রেসিডেন্টের।
প্রাথমিক তদন্তে কী জানা গেল?
অন্যদিকে, রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক দাবি করেছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে মার্কিন প্রতিনিধি দলের এক ভিডিয়োগ্রাফার হয়তো ভুল করে এস্কেলেটরের সুরক্ষা বোতাম টিপে ফেলেছিলেন। তবে এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ হোয়াইট হাউস। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সরাসরি জানিয়েছেন, “যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা ঘটে থাকে, তবে দায়ী ব্যক্তির চাকরি খারিজ করে তদন্ত হওয়া জরুরি। এটি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে একদিনে তিন-তিনটি বিপর্যয়, ট্রাম্পের বিস্ফোরক অভিযোগে আন্তর্জাতিক কূটনীতির অঙ্গন তোলপাড়। হোয়াইট হাউস এখন বিষয়টিকে রাষ্ট্রসংঘ-মার্কিন সম্পর্কের বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
