ওয়াশিংটন: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একতরফা শুল্ক আরোপের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের প্রসঙ্গ টানলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে ট্রাম্প-ঘোষিত শুল্কনীতির বৈধতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক।
যুদ্ধ ঠেকাতে ট্রাম্পের শুল্ক, দাবি ওয়াশিংটনের
লুটনিক আদালতে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের “কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে” ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি “ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি” কার্যকর হয়। তাঁর দাবি, ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত নির্বাহী সিদ্ধান্ত খারিজ হলে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের কাছে মার্কিন প্রস্তাবের বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস পাবে এবং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে।
লুটনিকের ভাষায়, “আদালতের কোনো বিরূপ রায় প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করবে, যার ফলে ভারত ও পাকিস্তান ট্রাম্পের কূটনৈতিক উদ্যোগকে অবিশ্বস্ত বলে মনে করতে পারে। এতে বিপন্ন হবে দক্ষিণ এশিয়ার কোটি মানুষের জীবন।”
যুদ্ধবিরতি হয়েছে সরাসরি যোগাযোগে trump tariffs us trade court
ভারত অবশ্য বহু আগেই ট্রাম্পের এই দাবিকে খণ্ডন করেছে। দিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতি কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। ফলে ট্রাম্পের বক্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির প্রেক্ষিতে গুরুত্বহীন।
শুল্কে চাপে চিন, বলছে ট্রাম্প প্রশাসন
আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় বড় যুক্তি ছিল চিনকে ঘিরে। বাণিজ্য সচিব দাবি করেন, এই শুল্ক আরোপের চাপেই আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছে বেজিং। চলতি মাসের শুরুতে একটি ৯০ দিনের অস্থায়ী চুক্তির আওতায় দুই দেশ শুল্ক হ্রাসে সম্মত হয় বলেও জানান তিনি।
লুটনিক বলেন, “যেসব দেশ দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন বাজারে পণ্যের ঢল নামিয়ে নিজেদের লাভ করেছে, তারা ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পরপরই আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছে। যারা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়নি, তাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
আদালতের সাফ কথা: প্রেসিডেন্ট সীমা ছাড়িয়েছেন
তবে এসব যুক্তি আদালতে টেকেনি। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের পর্যবেক্ষণ, আমদানি ও বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের সাংবিধানিক অধিকার একমাত্র কংগ্রেসের হাতে; প্রেসিডেন্ট তা নিজ ক্ষমতাবলে কার্যকর করতে পারেন না। রায়ে বলা হয়, “ট্রাম্পের জারি করা ব্যাপক শুল্ক আরোপ সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক সীমালঙ্ঘন।”
কূটনৈতিক সাফল্য এবং নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্কনীতির পক্ষে সওয়াল করলেও, আদালত সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমারেখা টেনে দেয়। ফলে শুল্কনীতির ওপর আইনগতভাবে বড় ধাক্কা খেতে হলো হোয়াইট হাউসকে।
World: Trump administration defends tariffs in US trade court, claiming they enforced India-Pakistan ceasefire and pressured China into trade talks. Howard Lutnick cited ‘fragile ceasefire’ as tariff justification. India refutes third-party mediation. Learn how these trade policies are linked to global diplomacy.