ভারতের সঙ্গে ‘অপূর্ব’ বাণিজ্যচুক্তি হতে চলেছে! জানালেন ট্রাম্প

China's Worries Deepen After Modi-Trump Meeting

ওয়াশিংটন: ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের সঙ্গে ‘অপূর্ব’ বাণিজ্যচুক্তির পথে মার্কিন মুলুক। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে এমনটাই জানান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তিকে তিনি ‘অপূর্ব’ বলেই ব্যাখ্যা করেন৷ এই চুক্তির মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেলেও, শুল্কযুদ্ধ চলবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ 

Advertisements

আমেরিকা থেকে ভারতে আমদানিকৃত পণ্যে শুল্ক কমানোর বিষয়ে অবশ্য কথা হয়েছে৷ পাশাপাশি, আরও বেশি করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে খনিজ তেল এবং সামরিক বিমান কেনার বিষয়ে মোদীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাঁর। শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় মোদীর প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, “উনি আমার চেয়েও বেশি কঠিন এবং ভাল মধ্যস্থতাকারী। এই নিয়ে প্রতিযোগিতা চলতে পারে না।”

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, খুব শীঘ্রই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য “দারুণ” কিছু বাণিজ্য চুক্তি করা হবে, যা দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।

‘অপূর্ব’ বাণিজ্যচুক্তির রূপরেখা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আগামী দিনে আমরা ইতিহাসের অন্যতম সেরা বাণিজ্যপথ ধরে কাজ করব। যে বাণিজ্যপথ ভারত থেকে শুরু হয়ে ইজরায়েল হয়ে, ইটালিকে ছুঁয়ে আমেরিকায় আসবে।” সড়ক, রেল এবং সমুদ্রগর্ভস্থ পথে চলা এই বাণিজ্য দুই দেশের সহযোগী দেশগুলিকেও ছুঁয়ে যাবে৷

ট্রাম্প তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে বেশ কিছু বড় বাণিজ্য চুক্তি করতে চলেছি। শীঘ্রই আমরা এই চুক্তিগুলি ঘোষণা করব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ভারতের জন্য কিছু দারুণ বাণিজ্য চুক্তি করব, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।”

প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর বক্তব্যে ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আপনার প্রথম মেয়াদে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক অনেক এগিয়ে গিয়েছে, এবং আমি বিশ্বাস করি যে আপনার দ্বিতীয় মেয়াদে আমরা আরও দ্রুত এবং আরও শক্তিশালীভাবে একসঙ্গে কাজ করব।”

ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শক্তি, প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “ভারত আমাদের কাছ থেকে আরও তেল ও গ্যাস কিনবে। আমাদের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিমাণ তেল ও গ্যাস রয়েছে, এবং ভারতকে এর প্রয়োজন রয়েছে।”

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে, মোদী বলেন, “ভারত কখনও নিরপেক্ষ ছিল না, বরং ভারত সব সময় শান্তির পক্ষে থেকেছে।” তিনি আরও বলেন, “যখন আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করি, আমি বলেছিলাম, ‘এটা যুদ্ধের সময় নয়, সমাধান আসবে শুধুমাত্র সমস্ত পক্ষ একসঙ্গে বসে আলোচনা করলে।'”

Advertisements

মোদী-ট্রাম্প বৈঠকের আগে, প্রধানমন্ত্রী মোদী মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, গোয়েন্দা সংস্থা প্রধান তুলি গ্যাবার্ড, বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক এবং রিপাবলিকান নেতা বিবেক রামস্বামীর সঙ্গেও আলাদাভাবে আলোচনা করেছেন।

ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্যও আলোচনা হয়েছে। দুটি দেশ যৌথভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারে, যার মধ্যে স্ট্রাইকার আর্মর্ড ফাইটিং ভেহিকল উৎপাদনের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

এছাড়া, ট্রাম্প গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা ভারতের জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তবে, ভারত ইতোমধ্যে এই ইস্যুতে নমনীয় মনোভাব গ্রহণ করেছে, যা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নেওয়া কঠোর অবস্থানের তুলনায় অনেকটা শিথিল।